একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে এই দিনে ছাত্র-জনতার মাঝে যে চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে, তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে গড়ে ওঠে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের ভিত্তি।
পরবর্তীতে, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক একুশে ফেব্রুয়ারি-কে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’-এর স্বীকৃতি প্রদান, জাতি হিসেবে আমাদের তুলে ধরেছে বিশ্ব দরবারে। সেদিনের আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচার গুলিতে নিহতদের স্মরণে, ভাষা আন্দোলনের প্রতীক হয়ে, আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শহীদ মিনার।
যেখানে প্রতিবছর ফুল দিয়ে আমরা স্মরণ করি ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ।
আর এই বিশেষ দিনটিকে উদযাপন করতে এক অনন্য উদ্যোগ নিয়েছে ফ্রেশ সিমেন্ট। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো দৃষ্টিশক্তিহীনদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ধরনের শহীদ মিনার তৈরি করেছে তারা।
দৃষ্টি শক্তিহীনদের জন্য বিশেষব্যবস্থা না থাকায়, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা এ দিনটিতে শহীদ মিনারে যেতে পারতেন না। কিন্তু ফ্রেশ সিমেন্টের উদ্যোগে মিরপুরের কল্যাণী ইনক্লুসিভ স্কুলে স্থাপিত দৃষ্টিশক্তিহীনদের জন্য বিশেষ শহীদ মিনারটির কারণে এবার তাদের সেই ইচ্ছা বাস্তবে রূপলাভ করেছে। এখন থেকে তারাও নিরাপদে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারবেন।
সকাল ১০টায় ফ্রেশসিমেন্ট-এর পক্ষ থেকে এমজিআই-এর সম্মানিত এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (ব্র্যান্ড) কাজী মো. মহিউদ্দিন এবং বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক স্কুলের দৃষ্টিশক্তিহীন ছাত্রছাত্রীদের সাথে নিয়ে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম-এর তত্ত্বাবধানে এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি করোনাকালীন সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সম্পন্ন হয়েছে।
স্বনামধন্য আর্কিটেক্ট-এর পরামর্শে এবং মিরপুরের কল্যাণী ইনক্লুসিভ স্কুলের শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই বিশেষ শহীদ মিনারটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
শহীদ মিনারটির দেয়ালে ব্রেইলে খোদাই করা আছে, ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটির কিছু অংশ।
সর্বোপরি, এমজিআই সবসময় তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের জন্য কাজ করে। তাই সমাজের সকল স্তরের মানুষের সঠিক জীবনযাত্রার জন্য যা যা করণীয়, এমজিআই তা নিশ্চিত করতে সব সময় সচেতন। এই শহীদ মিনার নির্মাণ সমাজের প্রতি তাদের সেই দায়বদ্ধতারই অংশ।