ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আলোচিত তাজরীন ফ্যাশনসের মালিক দেলোয়ার হোসেন। গত ১১ মে সংগঠনটির সম্মেলনে তাঁকে সভাপতি করা হয়।
২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন শ্রমিক পুড়ে মারা যান। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার মূল আসামি দেলোয়ার হোসেন।
মামলাটি এখনো চলছে।
গত ১১ মে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়কও ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। তাঁকেই সভাপতি ঘোষণা করে মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।
দেলোয়ার হোসেন আগে থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না জানতে চাইলে মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর নস্কর বলেন, ‘এ বিষয়টি আমি ঠিক জানি না। আমাদের সভাপতি বলতে পারবেন। আপনি তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। ’ তিনি আরো বলেন, ‘সে (দেলোয়ার) আমার হাত ধরে সংগঠনে আসেনি। বিগত কমিটির এক শীর্ষ নেতার মাধ্যমে সংগঠনে এসেছে। ’
দেলোয়ারকে সভাপতি নির্বাচনের প্রসঙ্গে শেখ আজগর নস্কর বলেন, ‘সে আমাদের বলেছে, কারখানা থাকলে তো দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। যারা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রত্যেককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ’
২০১৯ সালে মৎস্যজীবী লীগকে সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা দেয় আওয়ামী লীগ। এই মর্যাদা পাওয়ার পর এবারই প্রথম ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন হয়েছে।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন শ্রমিক পুড়ে মারা যান। অনেক শ্রমিক পঙ্গু হয়ে যান। সারা বিশ্বে ঘটনাটি আলোড়ন তোলে। আলোচিত এই মামলাটির তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর স্ত্রী তাজরীন ফ্যাশনসের চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, তাজরীন ফ্যাশনসের ভবনটির নকশায় ত্রুটি ছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় জরুরি নির্গমনের পথ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বের হতে পারেননি। নিরাপত্তাকর্মীরা অগ্নিকাণ্ডকে অগ্নিনির্বাপণ মহড়া বলে তাঁদের কাজে ফেরত পাঠিয়ে কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেন। আদালতে এমন অভিযোগপত্র দাখিলের বাস্তবতায় মানবাধিকার ও সমাজকর্মীরা তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসছেন।