অসিত রঞ্জন মজুমদার: ৩১ মে মঙ্গলবার ছিল বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সারাবিশ্বে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে দিবসটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক এবারের তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল Tobacco: Threat to our Environment : যার বাংলা ভাবানুবাদ করা হয়েছে “তামাকমুক্ত পরিবেশ: সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ”।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত বেসরকারি সংগঠনসমুহের সমন্বিত জাতীয় প্লাটফর্ম ‘এলায়েন্স ফর এফসিটিসি ইমপ্লিমেন্টেশন বাংলাদেশ (এএফআইবি)’ সকাল ১০টায় বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করে। র্যালিটি পুরানা পল্টন হতে বিজয়নগর-সেগুনবাগিচা হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে অবস্থান গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাপনী পর্বে এএফআইবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও স্বচ্ছ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুমন শেখের সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ওয়েলফেয়ার (জার) এর কার্যনির্বাহী সদস্য বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আকতার হোসেন, তারেক খান, শরীফ মাহমুদ আরিফ, এএফআইবি’র সদস্য বিআরডিএসের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম পিন্টু, এলআরবি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা রাজিয়া শিলা, জনঅধিকার ফাউন্ডেশনের সদস্য খাদিজা জাহান প্রমুখ।
এছাড়াও এএফআইবি’র বিভিন্ন নেটওয়ার্ক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা উল্লেখ করেন, বিশ্বে তামাক শিল্পের মাধ্যমে প্রতি বছর ৮৪ মেগাটন কার্বনড্রাই অক্সাইড নিসরণের মাধ্যমে গ্রীণ হাউস সমতা আনয়ণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। বর্তমান উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতিবছর তামাক চাষের কারণে ৩.৫ মিলিয়ন হেক্টর জমি ধ্বংস হচ্ছে। বিশ্বে তামাক উৎপাদনের প্রায় ৯০% উন্নয়নশীল বিশ্বে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক গোষ্টির উপর অসম প্রভাব রয়েছে। সারা বিশ্বে প্রতিবছর তামাক চাষের জন্য প্রায় ৩.৩৫ মিলিয়ন হেক্টর জমি ধ্বংস করা হয়। তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণে (curing) ২ লক্ষ হেক্টর বন উজাড় হচ্ছে। সারা বিশ্বে প্রতিবছর ৪.৫ ট্রিলিয়ন সিগারেটের বাট (উচ্ছিষ্ট অংশ) সঠিক ভাবে নিষ্পত্তি না হবার ফলে ১.৬৯ বিলিয়ন পাউন্ড বিষাক্ত বর্জ্য তৈরী করে থাকে। এর ফলে হাজার হাজার রাসায়নিক পদার্থ বায়ু, পানি ও মাটিতে ছড়িয়ে পড়ছে। যা প্রত্যক্ষভাবে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী।
তামাকের জীবন চক্রের প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবেশ দূষণকারী হিসেবে আখ্যায়িত করার ফলে এ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাক থেকে উত্তরণ ও জনসচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করেছে। সে কারণে তামাক চাষ, উৎপাদন এবং বিতরন থেকে বিষাক্ত বর্জ্য পর্যাপ্ত ক্ষতিকর দিক গুলোকে তুলে ধরার জন্য জনসচেতনতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। যাতে তামাক শিল্প মালিকগণ তামাক চাষ বিপনন কার্যক্রম পরিবেশ বাস্তব হিসেবে গড়ে তোলে। বিশেষ করে বিড়ি সিগারেট উৎপাদন কারখানায় green house প্রচেষ্টাকে জোরদার করণে বিশেষ ভূমিকা রাখা জরুরী।