বিডি মেট্রোনিউজ ডেস্ক॥ কয়েক রাউন্ড আগে নিজেদের হারিয়ে আবার দুর্দান্ত রূপে ফিরে পাওয়া লুইস এনরিকের দল ম্যাচ শেষেই মেতে ওঠে ২৪তম শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে। শেষ আটটি লা লিগার ছয়টিতেই শিরোপা জিতল কাতালান দলটি।
লা লিগায় বার্সেলোনার মোট শিরোপার এক তৃতীয়াংশই এসেছে মেসি-ইনিয়েস্তা দলের আসার পর। প্রথম ৭৫ বছর ১৬ বার চ্যাম্পিয়ন হয় বার্সেলোনা। আর ২০০৪ সালে মেসি মূল দলে খেলা শুরু করার পর আসে ৮টি লিগ শিরোপা।
দুর্দান্ত এই মৌসুমে বার্সেলোনার এখন পর্যন্ত অপ্রাপ্তি কেবল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনাল থেকে বাদ পড়া। গত মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জেতা দলটির এবার রয়েছে ঘরোয়া ‘ডাবল’ জেতার সুযোগ। মৌসুমে নিজেদের শেষ ম্যাচ মেসি-নেইমাররা খেলবে আগামী ২২ মে সেভিয়ার বিপক্ষে স্প্যানিশ কাপের ফাইনালে।
এর আগে মেসিদের রোমাঞ্চকর একটি লা লিগার মৌসুমের সাফল্য উদযাপন করে নেওয়ার পালা। রোববারই বার্সেলোনার রাস্তায় হবে বিজয় মিছিল।
৭ মিনিটেই দেপোর্তিভো লা করুনিয়ার জালে বল পাঠালেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। রিয়াল মাদ্রিদের শিরোপা স্বপ্নও তাতে বেড়ে গেল। ম্যাচের আগেই তো কোচ জিনেদিন জিদান নিজেদের কর্তব্য বলে দিয়েছেন, ‘শুরুতেই গোল করে বার্সেলোনাকে চাপে ফেলে দিতে হবে।’ কিন্তু রিয়ালের যদি একজন রোনালদো থাকে তবে বার্সেলোনারও তো আছে একজন লুইস সুয়ারেজ। এই স্ট্রাইকারের হ্যাটট্রিকেই ২৪ তম লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত হলো বার্সেলোনার।
বার্সেলোনার জন্য সমীকরণটি ছিল খুব সহজ। নিজেদের ম্যাচে জিতলেই হবে। আর রিয়ালের ক্ষেত্রে একটু জটিল। শুধু নিজেদের ম্যাচ জিতলেই চলবে না। বার্সেলোনাকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের চাপে রাখতে জিদান বলেছিলেন, ‘শুরুতেই গোল’। রোনালদোর গোলের খানিক পরই গ্রানাডার গোললাইন থেকে জেরার্ড পিকের হেড ফিরে এল। তখন মনে হচ্ছিল জিদানের কথাই বুঝি সত্য হয়ে গেল। চাপেই কী পড়তে যাচ্ছে বার্সেলোনা?
একটু পরেই মেসির চমৎকার এক পাস পেয়েও হেলায় সুযোগ হারালেন নেইমার। একটু হলেও শঙ্কা জাগছিল, মৌসুমের অর্ধেকেরও বেশি সময় এগিয়ে থেকে শেষ দিনে এসে কি শিরোপা হাতছাড়া হচ্ছে বার্সেলোনার? কিন্তু ২২ মিনিটে জর্ডি আলবার পাসে সুয়ারেজের গোলে স্বস্তি ফিরে পেল বার্সা।
অন্যদিকে করুনিয়ার মাঠে একটু পরেই রোনালদোর দ্বিতীয় গোল আবারও আশা জাগাল রিয়াল সমর্থকদের মনে। ১টি গোলই তো, গ্রানাডা গোল করে ড্র করলেই যথেষ্ট; শিরোপা উঠে যাবে রিয়ালের হাতে। কিন্তু রিয়ালের সব আশা ফুরোল ৩৮ মিনিটে। দানি আলভেজের ক্রস থেকে সুয়ারেজের হেড যখন আশ্রয় নিল গ্রানাডার জালে। ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে বার্সা তখন থেকে পেতে শুরু করল শিরোপার সুবাস।
অন্য মাঠে রিয়ালের খেলাতেও পড়ল সেই ছাপ। শিরোপা জেতা অসম্ভব দেখে এতক্ষণ দারুণ খেলা রিয়ালের খেলায় পড়ল আলস্যের ছাপ। বার্সেলোনা শিরোপা ধরে রাখার আনন্দে আক্রমণাত্মক খেলা চালিয়ে গেল। তার ফল মিলল ৮৬ মিনিটে। নেইমারের বাড়িয়ে দেওয়া পাসে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করলেন সুয়ারেজ। ৪০ গোল করে দলকে শিরোপা জেতানোর পাশাপাশি নিজের পিচিচি ট্রফিও নিশ্চিত করে নিলেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার।
গোলের খেলাতেও রিয়ালকে হারিয়ে দিল বার্সেলোনা। এ মৌসুমে লা লিগায় ১১২ গোল করেছে বার্সেলোনা। আর রিয়াল মাদ্রিদের গোল ১১০টি। বার্সার রাতে হতাশাই সঙ্গী হলো রিয়ালের। গত ৮ মৌসুমে মাত্র ১ বার লা লিগা জিতেছে ক্লাবটি। ১৯৫৩ সালের পর এতটা বাজে সময় পার করেনি লস ব্লাঙ্কোরা।