কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুইবারের নির্বাচিত মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘড়ি মার্কার মনিরুল হক সাক্কুকে ৩৪৩ ভোটে হারিয়ে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত।
বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত পেয়েছেন ৫০৩১০ ভোট, মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৪৯৯৬৭ ভোট। অপর প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘাড়া মার্কায় পেয়েছেন ২৯০৯৯ ভোট।
প্রথমবারের মতো কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ের মধ্যে দিয়ে ইতিহাস গড়লেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। এ জয়ের মধ্য দিয়ে কুমিল্লায় সাক্কু যুগের অবসান ঘটালেন তিনি। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন ঘোষণার পর এই প্রথম নৌকার প্রার্থী মেয়র পদে জয় পেয়েছেন।
বুধবার (১৫ জুন) রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ ফল ঘোষণা করেন। বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অন্য তিন প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘোড়া প্রতীকে ২৯ হাজার ৯৯, রাশেদুল ইসলাম হাতপাখায় তিন হাজার ৪০ ও কামরুল আহসান বাবুল হরিণ প্রতীকে দুই হাজার ৩২৯ ভোট পেয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে মোট দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ ভোটার ছিলেন। এরমধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৪টি ভোট পড়ে। তবে বাতিল হয় ৩১৯ ভোট। ভোট পড়েছে ৫৮.৭৪ শতাংশ। মোট ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪০টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টার দিকে ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী ৩১৯টি ভোট বাতিল হয়েছে। তবে ইভিএমে ভোট বাতিলের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী দাবি করেছেন, ব্যালটের মতো ইভিএমেও ভোট বাতিল হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘পুরো নির্বাচনে ৩১৯টি ভোট বাতিল হয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিতেও ভোট বাতিল হতে পারে। কোনও ভোটার সাদা বোতাম না চেপে পর পর দুইবার লাল বোতাম (ক্যান্সেল) চাপলে ভোট বাতিল হয়। তখন স্ক্রিনে লেখা আসে ভোটার কোনও প্রার্থী নির্বাচন করেননি। অর্থাৎ ভোটটি বাতিল হয়েছে। কাগজের ব্যালটে সিল না মেরে বক্সে ফেললে যেমনটা হয়।’
তবে ভোট বাতিলের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরাজিত প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মনিরুল হক সাক্কু। তার দাবি, ‘পুরো ফলাফল প্রকাশ্যে ছিনতাই হয়েছে। বিষয়টি দেশবাসীও দেখেছেন, আপনারা দেখেছেন। ইভিএমে ৩১৯ ভোট কীভাবে বাতিল হলো, এটা আমরা জানি না। এগুলো যান্ত্রিক বিষয়, সিস্টেমে কাজ হয়েছে।’