‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্যতালিকা থেকে সিগারেট বাদ দিতে উদ্যোগ নেয়া হবে’

‘আমাদের দেশের এসেনসিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট এ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে সিগারেট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ক্ষতিকর পণ্য হওয়া সত্বেও সিগারেট কিভাবে এ তালিকায় আসে তা খুবই অবাক করার মতো বিষয়। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো সিগারেটকে এ তালিকা থেকে বাদ দিতে’- বলেছেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি।

রোববার (২৮ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

এসময় তিনি আরো বলেন, ‘২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার জন্য শতভাগ কাজ করতে আমি প্রস্তুত। কারণ এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটিকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি এবং সমর্থন জানাচ্ছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার স্বাস্থ্য, জাতীয় অর্থনীতি ও পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ সরকার বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছে এবং আইন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। তামাক সেক্টর থেকে সরকার যে পরিমান রাজস্ব পেয়ে থাকে, তার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া তামাক শিল্পের সাথে অনেক মানুষ জড়িত আছে, এ মানুষগুলোর বিকল্প কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের যা করণীয় সেগুলো করা হবে।

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী, সংসদ সদস্য ও সভাপতি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এবং অধ্যাপক ডাঃ প্রান গোপাল দত্ত, সংসদ সদস্য ও সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

অধ্যাপক ডাঃ প্রান গোপাল দত্ত বলেন, তামাক যে খুবই ক্ষতিকর একটি পণ্য তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। হাল আমলে আরেকটি ভয়ংকর পণ্য হলো ই-সিগারেট। সিগারেট বা ই-সিগারেট উভয়টিই সরাসরি আমাদের প্রজন্মকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে আগামী প্রজন্মকে রক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেটিকে আমি জোড়ালো সমর্থন জানাচ্ছি।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, কোভিডে গত দুই বছরে দেশে মারা গেছে ৩০ হাজারের মতো মানুষ। অথচ তামাকজনিত রোগে মৃত্যুর সংখ্যা এর ১০ গুণেরও বেশি। কিন্তু আমাদের এটি নিয়ে চিন্তা নেই। প্রতি বছর আমাদের দেশে বাজেটে তামাকের দাম এমন ভাবে বাড়ানো হয় যাতে করে তামাক কোম্পানী সরাসরি লাভবান হয়। অথচ বর্ধিত করের পুরোটাই পাওয়ার কথা ছিল সরকারের। অথচ সেই প্রতিফলন আমরা দেখছি না।

সভায় আলোচক হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন মো. মোস্তাফিজুর রহমান, লিড পলিসি এডভাইজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস ও অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (গ্রেড-১), বিসিআইসি, হোসেন আলী খন্দকার, সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব), জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ডাঃ সৈয়দ মাহ্ফুজুল হক, ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (এনসিডি), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক সাজেদুল কাইয়ুম দুলালের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উপ-পরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমান।

Print Friendly

Related Posts