রাজধানীর উত্তরায় গার্ডার দুর্ঘটনার জন্য ১২ কারণ চিহ্নিত করেছে গঠিত তদন্ত কমিটি।
রোববার তদন্ত কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, ওই দিনের কাজ এবং লোকবল দুটোরই অনুমোদন ছিল না। খরচ কমানোর জন্য অযোগ্য লোকবল দিয়ে কাজ করাচ্ছিল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী এ তথ্য জানান।
তদন্ত কমিটি গত বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। তাতে এই দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণ চিহ্নিত করা হয় বলে জানান সচিব নূরী।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পেছনে ১২টি কারণ চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি। কারণগুলো হলো- পূর্বানুমতি ছাড়া ঠিকাদার কোম্পানি সরকারি ছুটির দিনে কাজ করেছে, বন্ধের দিন কাউকে না জানিয়ে কাজ করেছে, প্রথমবার দিনের বেলায় গার্ডার স্থাপনের কাজ করেছে, অন্যদিন তারা রাতে কাজটি করত। ক্রেনটি সহকারীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে, ড্রাইভার থাকলে সেটি হতো না। ক্রেনটির লাইসেন্স ছিল না। ক্রেনটি যেখানে চালানো হচ্ছিলে সেই জায়গাটি অসমতল ছিল। ক্রেনটির ডিজিটাল মনিটর ছিল না। কাজের পূর্বানুমতি ছিল না। ট্রাফিক ব্যবস্থা ছিল না, মূলত ট্রাফিককে জানাতে হয়।
তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে যোগ্য লোক ছিল না, নিজেরা এসব লোক রেখেছিল। সেফটি ইঞ্জিনিয়ারের যথাযথ যোগ্যতা ছিল না। ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ছিল না। সেজন্য গার্ডার সরাতেও সময় লেগেছে। ঠিকাদার হিসেবে যাদের কাজ দেওয়া হয়েছিল তাদের কোনো অনুমোদন ছিল না।
সচিব বলেন, তদন্ত কমিটি ১৬ আগস্ট প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। উক্ত প্রতিবেদনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায় চিহ্নিত হয়। পরবর্তীতে বিস্তারিত তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। ঘটনার পর প্রথমে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়, পরে সেটি বাড়িয়ে পাঁচ সদস্য করা হয়। গঠিত কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দেয়। এরপর বুয়েটের এক্সপার্টকেও কমিটিতে যুক্ত করা হয়। তদন্ত করতে গিয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গ্রেফতারসহ সবার বক্তব্য তারা নিয়েছে। তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। ভিডিও ফুটেজে তার বিবরণ আছে।
তিনি বলেন, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বলছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি চিঠি দিয়েছে। কিন্তু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেটি মন্ত্রণালয়ে জানায়নি। তারা সেটি জানালে আমরা চাইনিজ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতাম।