প্রধানমন্ত্রীর নিজামউদ্দিন আউলিয়ার দরগা জিয়ারত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দিল্লিতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা নিয়মিত নিজামউদ্দিন দরগায় জিয়ারতে যেতেন।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) উপমহাদেশের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় নিজামউদ্দিন আউলিয়ার দরগা জিয়ারতের মাধ্যমে ভারতে চারদিনের সফর শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেখানে কিছু সময় কাটান এবং ফাতিহা পাঠ ও মোনাজাত করেন।

প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সচিব কে এম সাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে নফল নামাজ আদায় ও মোনাজাতকালে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী পরে নিজামউদ্দিন আউলিয়ার দরগার বিভিন্ন অংশে যান। ভারতে সুফি সংস্কৃতির অন্যতম পবিত্রস্থান এই দরগাটি প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দিল্লিতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা নিয়মিত নিজামউদ্দিন দরগায় জিয়ারতে যেতেন।”

প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের শেষ দিনে রাজস্থানে আজমির শরিফ দরগা জিয়ারত করবেন। প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে আজমির শরিফ জিয়ারত করেন। এর আগে ২০১০ সালে যখন তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তখনও আজমিরে গিয়েছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের স্থানীয় সময় সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ভারত সফরের প্রথম দিন সোমবার বিকেলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শংকর মৌর্য্য হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর স্যুইটের সম্মেলন কক্ষে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। পরে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি একই স্থানে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যায় ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান ও মিসেস জাকিয়া হাসনাত ইমরান আয়োজিত এক অভ্যর্থনা ও নৈশভোজে যোগ দেন।

সফরের দ্বিতীয় দিনে ৬ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একান্ত আলোচনা করবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেখ হাসিনা পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তার সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। একই দিন শেখ হাসিনা ভারতের প্রেসিডেন্ট ধ্রুপদী মুর্মু ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখারের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

৬ সেপ্টেম্বর তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরের দিন ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী তার সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাত করবেন। একই দিনে ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেখা করার কথা রয়েছে।

৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সভায় এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বংশধরদের “মুজিব বৃত্তি” প্রদানের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরিফ, আজমির (আজমির শরিফ দরগাহ) জিয়ারত করার কথা রয়েছে।

Print Friendly

Related Posts