বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস

যানজটের জন্য মাত্রাতিরিক্ত প্রাইভেটকারকে দায়ী করা হলেও নিয়ন্ত্রণে নেই উদ্যোগ। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে রাজধানীতে চলাচলের জন্য ১০ হাজার ৮২৫টি প্রাইভেট গাড়ি নিবন্ধন নিয়েছে। গড়ে দিনে ৪৫টি প্রাইভেটকার যোগ হচ্ছে রাজধানীর সড়কে।

চলতি বছরে জিপগাড়ি নিবন্ধিত হয়েছে ৬ হাজার ৬৪৮টি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৯২৭। আর গত বছর প্রাইভেটকার নিবন্ধিত হয়েছিল ১৪ হাজার ৩২১টি। এ পরিসংখ্যান সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)।

বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস আজ। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জ্বালানি ব্যবহার ও যানজট নিয়ন্ত্রণ করি, ব্যক্তিগত গাড়ি সীমিত রাখি’।

দিবসটির উৎপত্তি খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৬১ সালে প্রকাশিত সাংবাদিক ও লেখক ইয়ান জ্যাকবস তার দি ডেথ অ্যান্ড লাইফ অব গ্রেট আমেরিকান সিটিস বইয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে প্রথম ধারণাটি আসে। এটি নগর পরিকল্পনায় দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৬২ সাল থেকে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে শুধুমাত্র পথচারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তারা এই ধারা অব্যাহত রেখেছে। এরপর ইউরোপে এই ধারণাটির প্রসার ঘটতে শুরু করে।

আরো ব্যাপকতা লাভ করে ৭০ দশকে জ্বালানি সংকটের সময়। ১৯৭৪ সালে সুইজারল্যান্ডে গাড়িমুক্ত দিবস পালন করা হয়। নব্বই এর দশকে এই উদ্যোগের আরো প্রসার ঘটে। যেমন বিশ্বব্যাপী কারফ্রি সিটি নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। এরপর ১৯৯৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সে জাতীয়ভাবে ৩৪টি শহরে গাড়িমুক্ত দিবস পালিত হয়।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা নগর ভবনে ডিটিসিএর সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকায় ৮০ শতাংশ ট্রিপ হয় ৫ কিলোমিটারের মধ্যে। এর অর্ধেক ট্রিপ হয় ২ কিলোমিটারের মধ্যে। স্বল্প দূরত্বের ট্রিপে সাইকেলে অথবা হেঁটে চললে প্রাইভেট গাড়ির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব।ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন জানিয়েছেন, আজ (বৃহস্পতিবার) মোহাম্মদপুর হাউজিং এলাকায় গাড়িমুক্ত সড়ক উদ্বোধন করা হবে।

পরিবেশ সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে দিবসটি। এ উপলক্ষে দেশের ৬০টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রতিবছর দিবসকে কেন্দ্র করে নানা রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হয়। বিশেষ করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সামনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। এ বছর দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিকে ভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২২ সেপ্টেম্বর সকালে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া দিবসকে কেন্দ্রকে জনসচেতনতার লক্ষ্যে পোস্টার, লিফলেট এবং বিভিন্ন সড়ক দ্বীপে ফেস্টুন স্থাপন করা হবে।

 

Print Friendly

Related Posts