শীতের সকালে টাটকা খেজুর রসের কদর

মোসলেম উদ্দিন: দিনাজপুরজুড়েই এখন ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীত। সময়টা এখন খেজুর রসের। গাছিরা খেজুর গাছ থেকে নামাচ্ছে টাটকা সুস্বাদু মিষ্টি রস। আর এ সময়ে খেজুরের রসের খুবই কদর।

শীতকালে পথেঘাটে ও বাজারে রসের হাঁড়ির সামনে বসে বা দাঁড়িয়ে অনেককেই খেজুরের রস খেতে দেখা যায়। এমন দৃশ্য এখন দিনাজপুরে অহরহ।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে হিলি-ঘোড়াঘাট মহাসড়কে দেখা যায়, একজন গাছি খেজুর রসের হাঁড়ি কাঁধে ঝুলিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। আর পথচারীরা সড়কে দাঁড়িয়ে গ্লাসে গ্লাসে টাটকা মিষ্টি রস পান করছেন। প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা, আবার এক কেজি রসের দাম ৪০ টাকা। অনেকেই নিজে খেয়ে পরিবারের জন্যও নিয়ে যাচ্ছেন।

খেজুরের রস এবং তার রস পিঠাসহ খেজুরের গুড় বাঙালির পুরনো ঐতিহ্যবাহী খাবার। শীতের আগমনের পর টাটকা মিষ্টি রস খেতে পাগল থাকেন অনেকেই। অন্যদিকে গাছিরা ভোর থেকে গাছ থেকে রস নামিয়ে বাজারজাত করার জন্য ছুটে বেড়ান। কারণ, বেলা ও রোদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রসের স্বাদও কমে যায়।

কথা হয়, হিলি-ঘোড়াঘাট মহাসড়কে গাছির রস খেতে দাঁড়িয়ে পড়া মোটরসাইকেল আরোহী সান্জিদা রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতের সকাল, টাটকা খেজুরের রস খেতে ভারি মজা। রসের নেশা আমার পিছু ছাড়েনা, শীত আসলেই মন রস খুঁজে বেড়ায়। ছোট বেলা থেকে খেজুরের রস খাওয়া আমার অভ্যাস। খেজুর রসের স্বাদই আলাদা। এই রসের যে একটি মিষ্টি গন্ধ আছে, যেটি অন্য কোন রসে নেই। ১০ টাকা করে ২ গ্লাস খেলাম।

রস কিনছিলেন নজরুল ইসলাম নামে আরেকজন। তিনি বলেন, শীতের সকালে ছোট বেলায় নিজেদের গাছের রস বড় গ্লাসে করে নিয়ে মুড়ি দিয়ে ভিজিয়ে খেতাম। এখন কিনে খেতে হচ্ছে, ৪০ টাকা কেজি দরে বাড়ির জন্য ৫ কেজি রস নিলাম।

গাছি রবিউল ইসলাম বলেন, এটা আমার বাপ-দাদার ব্যবসা, বছরে ছয় মাস এই ব্যবসা করে পুরো বছর চলি। এই শীত মৌসুমে আমি ২৫টি খেজুর গাছ থেকে রস পাচ্ছি। প্রতিদিন ২৫টি গাছ থেকে গাছে ৫০ থেকে ৬০ কেজি রস নামে। ভোর বেলা থেকে রস নামাতে থাকি, তা আবার বেলা বাড়ার আগে বিক্রি করে শেষ করি। এ থেকে দিনে ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকার রস বিক্রি করে থাকি। এদিয়ে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সংসার খুবই ভাল চলে।

 

Print Friendly

Related Posts