মেট্রোরেলের যাত্রীদের জন্য যা যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে

আগামীকাল বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) চালু হচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন। প্রথম ধাপে মেট্রোরেল চলবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ কিলোমিটারের রেলপথে। জানা গেছে, মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হবেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই।

বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেল স্টেশনে ধূমপান বা খাবার খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ জনসাধারণের জন্য কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে।

মেট্রোরেল, প্ল্যাটফর্ম এবং পুরো স্টেশন এলাকাকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তাই যাত্রীরা মেট্রোরেল পরিষেবা ব্যবহারের সময় ধূমপান করতে পারবেন না। এছাড়া, প্ল্যাটফর্ম এবং স্টেশনগুলোয় অবস্থানকালে খাবার ও পানীয় গ্রহণ করতে পারবেন না।

নির্ধারিত জায়গা ছাড়া রেলওয়ে চত্বরে অন্য কোথাও ময়লা ফেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া, মেট্রোরেল স্টেশনে দূষণ প্রতিরোধে পান চিবিয়ে থুথু না ফেলার জন্য যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্টেশনের সার্বিক সৌন্দর্য বজায় রাখতে পোস্টার, ব্যানার ও গ্রাফিতি লাগানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মেট্রোরেল চত্বরে ভিক্ষুকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। যেকোনো ধরনের পণ্য, বিশেষ করে ভারী পণ্য ফেরি করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। সেই সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র, পোষা প্রাণী বহন, বিপজ্জনক পণ্য পরিবহনও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

মেট্রোরেলের নারী কোচে পুরুষ যাত্রীদের উঠতে দেওয়া হবে না। প্রতিটি কোচে বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা হয়েছে। বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি ব্যতিত অন্য কেউ সেই আসনে বসতে পারবে না। পাশাপাশি একাধিক আসনও দখল করা যাবে না।

রেললাইনের পাশে স্বল্প দূরত্বে স্থাপিত তিনতলা বিশিষ্ট স্টেশনের দ্বিতীয় তলা থেকে যাত্রীদের টিকিট কিনতে হবে। তৃতীয় তলা থেকে যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে হবে। নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানোর পর আবারও টিকিট দেখিয়ে যাত্রীদের প্ল্যাটফর্ম ছাড়তে হবে।

মেট্রোরেলে প্রতি কিলোমিটার ভ্রমণের জন্য যাত্রীদের খরচ করতে হবে ৫ টাকা। সেই সঙ্গে বাহনটির ন্যূনতম ভাড়া ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিঙ্গেল জার্নি টিকিট এবং এমআরটি পাস ব্যবহার করে মেট্রোট্রেনে ভ্রমণ করা যাবে। টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (টিভিএম) থেকে সিঙ্গেল জার্নি টিকিট স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেনা যাবে।

যারা এটি ব্যবহার করতে পারবেন না, তারা বিক্রেতার সাহায্যে টিকিট অফিস মেশিন (টিওএম) থেকে নিজেদের টিকিট পাবেন। দুটি টিকিট কাউন্টার থেকে একই সময়ে সর্বোচ্চ পাঁচটি টিকিট কেনা যাবে।

এমআরটি পাসধারীরা পাস পেইড জোনের প্রবেশপথে থাকা নির্ধারিত স্ক্যানারে নিজেদের পাস স্ক্যান করে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে পারবেন। গন্তব্যে পৌঁছানোর পরে কার্ডটি আবারও স্ক্যান করতে হবে যাত্রীদের। এর মাধ্যম স্টেশন থেকে বের হওয়ার আগে যাত্রীদের নির্ধারিত ভাড়া কেটে নেওয়া হবে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক সাংবাদিকদের জানান, মেট্রোরেল পরিষেবার উদ্বোধনের দিন থেকে একটি নির্দিষ্ট ফিয়ের বিনিময়ে প্রতিটি স্টেশনে এমআরটি পাস পাওয়া যাবে। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ন্যূনতম ২০০ টাকা দিয়ে কার্ড কেনা যাবে। ৫০ টাকা জমা সাপেক্ষে এই কার্ড ব্যবহার করে যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারবেন। এই কার্ডে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ব্যালেন্স হিসেবে রাখা যাবে।

তিনি আরও জানান, কার্ড ব্যবহার করে যাত্রীরা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে পারবেন। এটি টিকিট ভেন্ডিং মেশিন ব্যবহার করে রিচার্জ করা যেতে পারে। ধীরে ধীরে মোবাইল এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এমআরটি পাসে রিচার্জের সুযোগ যুক্ত করা হবে।

Print Friendly

Related Posts