রাতের অন্ধকারে একা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন ঋষভ পন্থ, তাঁর সঙ্গে ছিল নগদ প্রায় চার লাখ টাকান। কেন অত দ্রুত গতিতে গা়ড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি, দুর্ঘটনার পর উঠে আসছে নানা প্রশ্ন।
দিল্লি-দেহরাদূন হাইওয়েতে রুরকির কাছে ক্রিকেটার ঋষভ পন্থের গাড়ি দুর্ঘটনার পর থেকে উঠে এসেছে নানা প্রশ্ন। চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল জানানো স্বস্তি পেয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। দুর্ঘটনার পর তাঁর অসহায়তার সুযোগে নগদ প্রায় চার লক্ষ টাকা লুট হয়ে যাওয়া নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে এত টাকা নিয়ে একা কেন বেরিয়েছিলেন পন্থ? সড়ক পথেই বা কেন যাচ্ছিলেন তিনি? তাঁর রুরকি যাওয়ার কথা জানতেন না পরিবারের সদস্যরাও। এমন কী তাঁর মাও।
পন্থ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ফেরার পর মাকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন। তাই কয়েকটা দিন দিল্লিতে কাটিয়ে রুরকির বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মা এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে পুরো বিষয়টি গোপন রাখতে একা গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ইচ্ছা ছিল পরিবারের সকলকে নিয়ে বড় করে ইংরেজি নববর্ষ পালন করবেন। সে জন্য সঙ্গে নিয়েছিলেন পর্যাপ্ত টাকা। দিল্লির পড়শিরাও যাতে তাঁর বাড়ি যাওয়ার কথা জানতে না পারেন, তাই রাতের অন্ধকারে যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা করেছিলেন ২৫ বছরের আগ্রাসী ক্রিকেটার।
দুর্ঘটনার পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে এ সব কিছুই বলেননি তিনি। বলেছেন এক চিকিৎসককে। দুর্ঘটনার পর পন্থকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় সক্ষম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক সুশীল নাগর এ ভাবে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কারণ জানতে চান পন্থের কাছে। তিনি বলেছেন, ‘‘পন্থ রক্তাক্ত অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আসার পর কিছু কথা হয়। পন্থ বলেছে, মাকে চমকে দিতে চেয়েছিল। তাই গোপনে বাড়ি যাচ্ছিল। শুক্রবার সকালে হঠাৎ মায়ের সামনে হাজির হতে চেয়েছিল পন্থ। পরিবাবের সকলকে নিয়ে বছরের শেষে আনন্দ করার পরিকল্পনা করেছিল।’’ দ্রুত গাড়ি চালানো নিয়ে পুলিশকে পন্থ জানিয়েছেন, ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন।
সক্ষম সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে পরে চিকিৎসার জন্য পন্থকে দেহরাদূনের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। প্রয়োজনে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে পন্থের চিকিৎসা করানো হতে পারে। তাঁর চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। নিয়মিত খবর রাখছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও।
বিসিসিআই সচিব জয় শাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কপাল, হাঁটু, পিঠ-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত লেগেছে তাঁর। চিকিৎসকরা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর পরিস্থিতি স্থিতিশীল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পন্থের কপালের দুটি জায়গা কেটে গিয়েছে। উইকেটরক্ষকের ডান হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছে। ডান হাতের কব্জিতে আঘাত পেয়েছেন তিনি। ডান পায়ের গোড়ালি এবং পাতাতেও গুরুতর চোট পেয়েছেন পন্থ। পিঠের বেশ কিছুটা অংশ ঘর্ষণের ফলে জখম হয়েছে।