তারেকুর রহমান: ভোরে কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের উঁকিতে শুরু হয়েছে নতুন বছরের প্রথম দিন। সুখ সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনাময় স্বপ্ন বাস্তবায়নের আকাঙ্ক্ষায় নতুন বছরের প্রথম সূর্যালোককে স্বাগত জানিয়েছেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হাজারো পর্যটক। সবার প্রত্যাশা, বিগত বছরের অন্ধকার কেটে আলোর পথে এগিয়ে যাবে ২০২৩।
রোববার (১ জানুয়ারি) নতুন বছরের প্রথম সূর্য দেখার জন্য ভোরের আগ থেকেই সৈকতে পর্যটকদের ভিড় জমে।
আগের দিন শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের অংশ হিসেবে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে আতশবাজি, ফানুস উড়িয়ে ২০২২ সালকে বিদায় জানিয়েছেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কনসার্ট নাচ-গান বাজনা হইহুল্লোড় হয়েছে সৈকতে ।
রোববার ভোর সাড়ে ৬টা। কনকনে শীতে কুয়াশা পড়ে ভিজে গেছে সৈকতের বালু। বালুতে পা দিলেই পায়ের সাথে লেগে যাচ্ছিলো কুয়াশার ভেজা মাটি। সৈকতে দাঁড়িয়ে বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখা প্রকৃতিপ্রেমিদের চা দিতে কেতলি হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ভাসমান দোকানি।
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে কক্সবাজার বেড়াতে আসা দম্পতি অমিত সরকার-পূজা বিশ্বাস। কথা হয় তাদের সাথে।
অমিত সরকার বলেন, প্রিয়জনের হাতটি ধরে বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখার মতো মধুর মুহূর্ত আর হতে পারে না। অনেক কষ্ট করে সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রিয়জনের সাথে সৈকতে চলে এলাম। নতুন সূর্য দেখলাম। ভালো লাগছে অনেক।
নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া থেকে আসা পর্যটক ওয়াহিদ জামান বলেন, সৈকত থেকে কিংবা যেকোনো খোলা মাঠ থেকে সূর্যোদয় খুব ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয়টা উপভোগ করার জন্য আমরা সপরিবারে কক্সবাজারটা বেছে নিয়েছি। এখানে এসে আরো অনেক পর্যটকের সাথে সূর্যোদয়টা দেখে খুবই ভালো লাগছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মুশফিক বলেন, সারা বছর সূর্য উঠবে-ডুববে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু বছরের শেষ সূর্যাস্ত ও নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় উপভোগের মধ্যে একটা আনন্দ কাজ করে। সেই আনন্দটা মনের খোরাক হিসেবে ধরে রাখতে নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখা।
এদিকে সৈকতে ভ্রমণ করা দর্শণার্থীদের নিরাপত্তায় দিবারাত্রি কাজ করে যাচ্ছেন বিচকর্মী, লাইফগার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। পর্যটকদের যেকোন সমস্যায় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, কক্সবাজারকে আরো বেশি পর্যটক বান্ধব করে গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসন অনেক আন্তরিক। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবায় সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি আমরা। এরপরও পর্যটকদের যেকোনো সমস্যা হলে আমাদের তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্র যোগাযোগ করলে সেবা-সহযোগিতা পাবেন তারা।