টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথের দ্বার খুলে দেওয়ায় প্রাণ ফিরেছে কক্সবাজারে

তারেকুর রহমান: পর্যটন মৌসুম শেষ হতে আর মাত্র দু মাস বাকি। এরইমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথের দ্বার। জেলায় বন্ধ নেই কোনো পর্যটন স্পট। এসব স্পটে দিন দিন বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। সবমিলিয়ে প্রাণ ফিরেছে পর্যটননগরী কক্সবাজারে।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সমুদ্রসৈকতে ভিড় করেছে লাখো পর্যটক। এদিন সকালে টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট থেকে সেন্টমার্টিন নৌপথে এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস জাহাজে ৬১০ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন রওনা দেন। আজ (শনিবার) থেকে এ ঘাট থেকে আরো কয়েকটি যাত্রীবাহী জাহাজ চলবে। এতে করে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা কক্সবাজারে ভিড় করতে শুরু করেছে।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১১টায় সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট থেকে ডায়াবেটিক পয়েন্ট পর্যন্ত সৈকত জুড়ে মানুষ আর মানুষ।

নতুন বছরে আপনজনদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর অন্যতম জায়গা হিসেবে কক্সবাজারে আসছেন পর্যটকরা। টায়ারে চড়ে নীল জলে ঢেউয়ের সাথে গা ভাসিয়ে পয়সা উসুল করছেন তারা। অনেকেই দ্রুত গতির জেটস্কি (ওয়াটার বাইক) নিয়ে শ্রেষ্ঠ রাইডারের সাধ মেটাচ্ছেন। অনেকেই আবার বিচ বাইক কিংবা ঘোড়ায় চড়ে রাজার বেশ নিচ্ছেন। শিশুরা ভেজা মাটির ইমারত তুলছেন। আর বেশিরভাগ পর্যটক আপনজনের হাত ধরে চিকচিক বালিতে হাঁটছেন।

হাওয়াই মিঠাই হাতে নিয়ে বালিতে হাঁটছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ি থেকে আসা আমিন-রিফা দম্পতি। আমিন বলেন, ৫-৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। অন্যান্যরা সমুদ্রে গোসল করছে আমরা বালিতে হেঁটে হেঁটে কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগ করছি। কক্সবাজার এমন একটি জায়গা যেখানে একই স্থানে একাধিক বার এলেও বার বার আসতে মন চায়।

সিরাজগঞ্জের চৌহালীর স্কুল শিক্ষক আবদুল মান্নান বলেন, বাচ্চারা বার বার সমুদ্র দেখতে চায়। প্রথমে ভাবছিলাম কুয়াকাটা বেড়াতে যাবো। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কক্সবাজার এলাম। খরচ একটু বেশি হলেও কক্সবাজারের সৌন্দর্য অন্যান্য জায়গা থেকে আলাদা। এখানে সাগর এবং পাহাড় দুটোই একসাথে উপভোগ করার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই পরিবার নিয়ে প্রতি বছর এখানে ছুটে আসি।

সেন্টমার্টিনে যাত্রীবাহী জাহাজ যেতে পারায় পর্যটন সংশ্লিষ্টরা ক্ষতি পুষিয়ে লাভের আশা করছেন। সেই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারে বেশি পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা দেখছেন।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, দীর্ঘদিন পর টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়াতে কক্সবাজারে অসংখ্য পর্যটক বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিনেও যথেষ্ট পর্যটক ছিল কক্সবাজারে। প্রায় হোটেলে বেশির ভাগ রুম বুকিং ছিল। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পর্যটক আরো বেশি হবে বলে আমরা আশা করছি।

পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা প্রশাসনের নিয়োজিত বিচকর্মী ও সি সেইফ লাইফগার্ড কর্মীরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts