রঙিন ফুলকপি: বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি

শেরপুর প্রতিনিধি:শেরপুরে পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ আর বেগুনি রঙের ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। রঙিন ফুলকপি চাষে এ জেলায় এই প্রথম। পরীক্ষামূলক প্রথমবারের চাষেই বাম্পার ফলন হয়েছে।

পাশাপাশি বাজারে চাহিদা ভাল থাকায় কৃষকেরাও খুশি। আগামিতে আরো বেশি জমিতে বাহারি রঙের ফুলকপির চাষের পরিকল্পনা করছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার প্রথমবার হলুদ, বেগুনি, খয়েরি ও সাদা রঙের ফুলকপি চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারের এর চাহিদাও ভাল। আগামিতে ব্যাপকভাবে বাহারি রঙের ফুলকপি চাষে কৃষিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবারই প্রথম শেরপুরের ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলায় পৃথকভাবে পরীক্ষামূলক হলুদ, খয়েরি ও বেগুনি রঙের ফুলকপির চাষাবাদ করা হয়েছে। রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন বেশি। এই ফুলকপির দিকে চোখ পড়লে চোখ আটকে যায়।

নকলার কৃষক আবুল কালাম আজাদ মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে ২ হাজার হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপির চারা রোপণ করেছেন। এতে তার ব্যয় হয়েছে মাত্র ৭ হাজার টাকা। তার ক্ষেতে প্রতিটি ফুলকপির ওজন হয়েছে প্রায় এক কেজি। তিনি এসব ফুলকপি বিক্রি শুরু করেছেন। বাজারে এর চাহিদাও বেশি।

আবুল কালাম আজাদ জানান, সাদা ফুলকপির মতোই এর চাষাবাদ পদ্ধতি। খরচও একই। কিন্তু ফলন ভাল। বাজারে এর চাহিদা বেশি থাকায় প্রতিটি কপি বিক্রি করছেন ৩৫ হতে ৪০ টাকায়। তিনি আশা করছেন প্রায় ৭০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করবেন।

অপরদিকে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ১৫ শতক জমিতে চার রঙের ফুলকপির বীজ বপন করেন কৃষক শফিকুল ইসলাম। এতে তিনি কোন প্রকার রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু জৈব সার ব্যবহার করেছেন। এতে চারাসহ সব মিলে তার খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। চারা রোপণের ৭০ থেকে ৭৫ দিন পর ক্ষেতে আসে রঙিন ফুলকপি।

ঝিনাইগাতীন সবজি চাষি শফিকুল জানান, রঙিন ফুলকপি এরই মধ্যে বিক্রি শুরু করেছেন। তিনি আশা করছেন, পুষ্টিগুণে ভরপুর এই রঙ্গিন ফুলকপিগুলো ১লাখ ৩০হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারবেন।

তিনি বলেন, মজার ব্যাপার হলো রঙিন এসব ফুলকপি দেখতে প্রতিদিনই এলাকার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ আমার জমিতে ভিড় করছেন। কেউ নিচ্ছেন চাষের পরামর্শ আবার কেউ কেউ তুলছেন ছবি। তাছাড়া বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায় এসব রঙিন কপি।

শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, একটি প্রকল্পের আওতায় তিনটি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে রঙিন ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে রঙিন ফুল কপি চাষে সার ও বীজ সরবরাহের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও নজর কাড়ার মতো। ফলন ভাল হওয়ায় আগামিতে ব্যাপকভাবে রঙিন ফুল কপির চাষ হবে। এতে বাজার বাড়বে রঙিন ফুলকপির। এটি কৃষির জন্য একটি সুসংবাদ। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামিতে কৃষকরা দক্ষতার সাথে রঙিন ফুলকপির চাষাবাদ করবে বলে আশা করছি।

 

Print Friendly

Related Posts