কৃষ্ণনগর ও জিনোদপুরে পাস করেনি কেউ, ব্যারিষ্টার জাকির আহাম্মদ কলেজে ৮৮ জন জিপিএ-৫ 

জ, ই বুলবুল: এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেপুর ব্যারিষ্টার জাকির আহাম্মদ কলেজ থেকে ৮৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। যা এবারের ফলাফলে গোটা উপজেলায় সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পাওয়ার শীর্ষ রেকর্ড।

তবে উপজেলার জিনোদপুর স্কুল এন্ড কলেজ এবং কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়াতো দূরের কথা এ দুটি আলোচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে একজন পরীক্ষার্থীও এবার পাশ করতে পারেনি।

এ নিয়ে গত দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে নানা নেতিবাচক লেখালেখি চলছে।

এদিকে গতকাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকাররম হোসেনের স্বাক্ষরযুক্ত এক প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের এইচএসসি আলীম ও কারিগরি পরীক্ষায় উপজেলার ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২১২২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এরমধ্যে ১৮৪৭ জন পাশ করে। পাশের হার ৮৭%। যার মধ্য থেকে মোট ২২৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, উপজেলার ১৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নবীনগর সরকারি কলেজ থেকে ২৩ জন, নবীনগর মহিলা কলেজ থেকে ৮ জন, কাইতলা আলীমুদ্দিন জোবেদা কলেজ থেকে ২ জন, সলিমগঞ্জ কলেজ থেকে ৫০ জন, শিবপুর সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ কলেজ থেকে ৫ জন, ব্যারিষ্টার জাকির আহাম্মদ কলেজ থেকে ৮৮ জন, শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৪জন এবং বিটঘর দানবীর মহেশচন্দ্র ভট্টাচার্য কলেজ থেকে ১৭ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

তবে কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৭ জন ও জিনোদপুর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও, এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একজনও পাশ করতে পারেনি। তবে উপজেলার বীরগাঁও স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাত্র ১জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে এবার পাশের হার ‘শতভাগ’ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

এদিকে আলীম পরীক্ষায় উপজেলার নারায়ণপুর ডিএস ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ৮ জন, সুফিয়াবাদ শাহ সুফী আলীম মাদ্রাসা থেকে ৩জন ও লাউর ফতেপুর তুজুমিয়া আলীম মাদ্রাসা থেকে ৩ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। অপর দিকে কারিগরি পরীক্ষায় উপজেলার খাগাতুয়া তোফায়েল আলী কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১৪ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

এদিকে এবার গোটা উপজেলায় লাউর ফতেপুর ব্যারিষ্টার জাকির আহাম্মদ কলেজ থেকে সর্বোচ্চ ৮৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে শীর্ষ ফলাফল অর্জন করায় অত্র কলেজের অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন কলেজ প্রতিষ্ঠাতাসহ সংশ্লিষ্টরা অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে কলেজ প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিষ্টার জাকির আহাম্মদ কলেজের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,’অত্র কলেজ থেকে ৩২৮ জন পরীক্ষার্থী এবার অংশ নিয়ে ৩১৭ জন পাশ করেছে। যারমধ্যে ৮৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। অথচ এই ৩২৮ জনের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া মাত্র ১১ শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হয়েছিলো। কিন্তু এলাকাবাসির সহযোগিতায় ও আমাদের কলেজের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবার ৮৮ জন জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ইনশাল্লাহ আগামিতে আমরা শতভাগ  ভালো ফলাফল করবো।’

এদিকে উপজেলায় ফলাফল খারাপ করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন বলেন,’সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মোতাবেক এ বিষয়ে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এ বিষয় নিয়ে উক্ত কলেজ পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্বে থাকা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ চেয়ারম্যান (সাবেক) বলেন, চেস্টার কোনই ট্রুটি ছিলো না, তবে ছাত্র-ছাএীদের অভিভাবকদের অচেতনাও অনেকটা দায়ী ।তা ছাড়া করোনা মহামারীর কারণে ছেলে-মেয়েরা অনেকাংশেই পিছিয়ে পড়েছে, আমরাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছি, আগামীতে ইনশাআল্লাহ ভালো করার চেষ্টা করবো। মানুষ পরাজয় থেকেই জয়ের স্বপ্ন দেখে।

Print Friendly

Related Posts