বরেন্দ্রভূমিতে ফুলের সমারোহ

মেহেদী হাসান শিয়াম: বছরের পর বছর ফাঁকা পড়ে থাকা বরেন্দ্র অঞ্চলের জমিতে এবার ফুল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন শফিকুল ইসলাম নামের এক চাকরিজীবী। রুক্ষ আবহাওয়ার কারণে ওই সব জায়গায় সব ধরণের ফসল না হলেও এই বছরে বরেন্দ্র ভূমিতে প্রথম বারের মতো ফুল চাষে সফল হয়েছেন তিনি।

এই বছর শুধু ভালোবাসা দিবসকে ঘিরেই আড়াই লাখ টাকার ফুল বিক্রি করার টার্গেট শফিকুলের কর্মচারীদের। তারা নিজেরাই বাজারে খুচরা মূল্যে ফুলগুলো বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু ফুল উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদেরকে কিছুটা হলেও বেশি মূল্য দিয়ে ফুল কিনতে হচ্ছে।

সরেজমিনে শফিকুলের ফুল বাগানটিতে গেলে দেখা যায়, তিনি বরেন্দ্র অঞ্চলে একটি বিনোদন পার্কের ভিতরে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে কয়েক রকমের ফুল চাষ করেছেন। তার বাগানে গাঁদা আর গোলাপ ফুলের সংখ্যেই বেশি। এছাড়াও গ্ল্যাডিওলাস, জারবেরা, রজনীগন্ধ্যা, চন্দ্রমল্লিকা ফুলও বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করা হচ্ছে সেখানে।

ফুল বাগানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছেন যিনি, তার নামও শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাগানটিতে পাঁচ-ছয় রকমের ফুল চাষবাদ করা হয়। এরমধ্যে গাঁদা ও দেশি-বিদেশি গোলাপ ফুলের চাষটা বেশি হয়। দোকানে যেমন চাহিদা থাকে তেমন ফুল কাটা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে এখন ফুলের চাহিদাটা বেশি।’

তিনি বলেন, ‘বাগানে ফোটা গোলাপ ফুলগুলো যেন নষ্ট না হয় সে কারণে কাভার দিয়ে রাখি। যে ফুল যত বেশি সতেজ, সেই ফুলের বাজারে চাহিদা ততো বেশি। একারণে আমরা বাড়তি যত্ন নিয়ে ফুল চাষ করছি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের সাটু হল মার্কেটের নিচতলায় সাদিয়া ‘শিফা ফুল ঘর’ ও ‘বরকনে সাজ’ নামের একটি ফুলের দোকান আছে।এই দোকানের মাধ্যমে শফিকুল তার ফুলের ব্যাবসা বাণিজ্য করেন।এছাড়াও এই দোকানে অনেকেই ফুলের অর্ডার দিয়ে যান, সময়ের মধ্যে তরতাজা ফুল পেয়ে খুশিও হন ক্রেতারা।দোকানটির সার্বিক দায়িত্বে আছে আব্দুল হাকিম নামের একজন যুবক।

দোকানের ম্যানেজার আব্দুল হাকিম নামের ওই যুবক বলেন, ‘অন্যান্য দিবস বাদে শুধু মাত্র ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আমাদের আড়াই লাখ টাকার ফুল বাণিজ্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এখানে যারা ফুলের ব্যবসা করেন, তারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে আসেন।সময়ের মধ্যে ফুলের দোকানদাররা মাল না পেলে অনেকেই ঘুরে যান। কিন্তু আমাদের এই সুযোগ নেই।নিজের জমিতে ফুল চাষ হওয়ার কারণে সময়ের মধ্যে আমরা কাস্টমারদের ফুল দিতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাগানের গোলাপফুল গুলো খুচরা বিক্রি করি ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত।এছাড়াও আমরা চন্দ্রমল্লিকা ১০ টাকা,  জারবেরা ২০ টাকা, রজনীগন্ধ্যা ১৫ টাকা দামে সেল করছি।দোকানে আমাদের জমিতে চাষকরা ফুলই বিক্রি করি।আগামিতে বড় পরিসরে ফুল চাষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজস্ব উৎপাদিত ফুল সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

Print Friendly

Related Posts