জাহিদুল হক চন্দন: বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন মানিকগঞ্জের কৃতি সন্তান শহীদ রফিকউদ্দিন আহমদ। দীর্ঘ ৭১ বছরেও তার কবর শনাক্ত করা যায়নি। তবে তার মা রোফেজা খাতুনের কবর শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকলেও অনেকেই তা জানেন না।
১৯৮৯ সালে ৮৪ বছর বয়সে শহীদ রফিকের মা মারা যান। সর্বস্তরের মানুষ সহজে যেনো শ্রদ্ধা জানাতে পারে সেই উদ্দেশ্যে গ্রামের বাড়ি সিংগাইরের পাড়িলে তার মরদেহ সমাহিত না করে দেবেন্দ্র কলেজের মাঠের দক্ষিণ পাশে সমাহিত করা হয়। বর্তমানে শ্রদ্ধা জানানো দূরের কথা, অনেকে তা জানেনও না। কবরের পাশে জরাজীর্ণ পরিবেশ, নেই কোন সাইনবোর্ড। ফলে কবরটি কার সাধারণ মানুষ তা জানতেও পারছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী হিমেল সুলতান বলেন, দেবেন্দ্র কলেজে লেখাপড়া করছি। এই রাস্তা দিয়েই চলাফেরা করি। কিন্তু এটি যে ভাষা শহীদ রফিকের মায়ের কবর তা জানতাম না। আর জানবোই বা কি করে? এখানে নেই কোন সাইনবোর্ড বা ম্যুরাল।
মাহবুবুর রহমান খান চপল বলেন, কবরটি দেখে বুঝার উপায় নেই এটি শহীদ রফিকের মায়ের কবর। এখানে পরিবেশটাও জরাজীর্ণ। এখানে কেউ কখনও শ্রদ্ধা জানাতেও আসে না। এটি খুবই দুঃখজনক।
অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, শহীদ রফিকের মায়ের কবর হিসেবে যে পরিমান সংস্কার বা কবরটি সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত তা নেওয়া হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষ এখানে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগটুকু পাচ্ছেন না। দ্রুত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আযম খান আপেল বলেন, শহীদ রফিক আমাদের গর্ব। তার কবর এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তবে তার মায়ের কবর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। তারপরও কবরটির আশেপাশের পরিবেশ জরাজীর্ণ। দ্রুত এটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
শহীদ রফিকের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.খোরশেদ আলম বলেন, কবরটির জায়গা নিয়ে দেবেন্দ্র কলেজের বিরোধ রয়েছে। বিষয়টি সুরাহার জন্য একাধিকবার মিটিং হয়েছে। তবে কোন সমাধান হয়নি। ফলে এখানে নিজেরাও কোন আয়োজন করতে পারি না। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি নানা আয়োজনে পালিত হলেও এখানে কোনো আয়োজন নেই।
পৌর মেয়র রমজান আলী বলেন, শহীদ রফিকের বাড়ি সিংগাইরের পাড়িলে। তারপরও সর্বস্তরের মানুষ যাতে শহীদ রফিককে স্মরণ করে তার মায়ের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে পারে সেজন্য শহরের প্রাণকেন্দ্রে সমাহিত করা হয়েছে। দ্রুত কবরটি সংস্কার করা হবে।