মেহেদী হাসান : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মেয়ে নূরে জান্নাত অনলাইনে ‘আটার নাড়ু’ বিক্রি করছেন। অবশ্য তিনি ব্যবসাটি শুরু করেছিলেন জেলার উৎপাদিত আম, আমের আচার, কুমড়া বড়ি, বিভিন্ন প্রকারের ছাতু বিক্রির মধ্য দিয়ে। নতুন করে তাদের ব্যবসার পসার ঘটাচ্ছে ‘আটার নাড়ু’।
রাজশাহী কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করে অন্যের প্রতিষ্ঠানে চাকরি না করে নিজেই একটি অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। নিজ জেলার পণ্য বাজারজাত করে দেশজুড়ে সুনাম ছড়িয়ে দেওয়াই তার অনলাইন ব্যবসার মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য।
২০২১ সালে অনলাইনে পণ্য বিক্রির ব্যবসায় নাম লেখান নুরে জান্নাত। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে আছেন তারই মেয়ে আসিফা আফরোজ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনার ব্যবসায় নুরে জান্নাত একাই ‘আটার নাড়ু’ বিক্রি করেন। এই ‘আটার নাড়ু’ বিক্রি করে যেমন আয় হচ্ছে, তেমনই কয়েকজন গৃহিনীরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। ‘আটার নাড়ু’ বিক্রির পাশাপাশি তার অন্যান্য পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত।
নুরে জান্নাত বলেন, ‘আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অনেক সুস্বাদু খাবার আছে যা অন্য জেলার মানুষদের কাছে অপরিচিত। আমাদের জেলার গ্রামীণ খাবারগুলো অনান্য জেলার মানুষদের কাছে পরিচিত লাভ করুক এই চিন্তা থেকে ‘আটার নাড়ু’ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া। অনলাইন ব্যবসার শুরু থেকে এই নাড়ু বিক্রি করছি। বিভিন্ন জেলা থেকে অর্ডারও আসছে।’
চাল ভেজে, যাতায় পিষে আটা বানানো হয়। সে আটার সাথে আখের গুড়সহ বভিন্ন ধরনের মসলা আর ঘি মিশিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই আটার নাড়ু বানানো হয়।
নুরে জান্নাত বলেন, ‘আটার নাড়ুর প্রথম অর্ডার রাজশাহী জেলা থেকে পাই। সেখান থেকে শুরু হয় আটার নাড়ু বিক্রির যাত্রা। বাইরের জেলাগুলোতে আটার নাড়ুর চাহিদা ভালো আছে। এমনভাবে বিক্রি হতে থাকলে আগামিতে দেশজুড়ে এই নাড়ুর চাহিদা শীর্ষে থাকবে বলে আশাবাদী।’
শতরুপা নামের এক ওয়েব পেজের মাধ্যমে নুরে জান্নাত অলনাইনে পণ্য বিক্রি করে থাকেন। তিনি সেখানে আম, আমের আচার, আমস্বত্ব, কুমড়া বড়ি, নকশি কাঁথা, ছাতুসহ আরও অনেক পন্য বিক্রি করে থাকেন। দুই বছরের মাথায় তার অনলাইনে ব্যবসার পরিধি বাড়ার পাশাপাশি ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সম্প্রতি নুরে জান্নাতের ব্যবসার পণ্যগুলো দেখে গেছেন কয়েকজন জাপানি নাগরিক।তারাও ‘আটার নাড়ু’ খেয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সাথে করে দেশেও নিয়ে গেছেন বলে জানিয়ে নুরে জান্নাত বলেন, ‘আমাদের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুস্বাদু খাবারসহ ঐহিত্যবাহী পণ্যগুলো দেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিদেশেও পৌঁছে যাচ্ছে।এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া।কয়েকজন জাপানি নাগরিক আমাদের পণ্যগুলো দেখে গেছে। সাথে আটার নাড়ু, নকশি কাঁথা, আদি চমচম ও আম দিয়ে বানানো বিভিন্ন রকমের আচার তারা নিয়ে গেছে।’