বাংলা উৎসব ও বইমেলার রজত জয়ন্তীতে নিউইয়র্ক মাতোয়ারা

২৫ বছর পূর্তি উৎসব ছিল মহামিলন তীর্থ

bangla-2

মিজানুর রহমান, নিউইয়র্ক  বাংলা ভাষা, সাহিত্য-সংস্কৃতির আকাশে উজ্বল ধ্রুবতারা হয়ে এবার জ্বলে উঠলো মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব ও বইমেলার রজত জয়ন্তী উৎসব। গত ২০, ২১ ও ২২ মে জ্যাকসন হাইটসের পিএস ৬৯ মিলনায়তনে তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব ও বইমেলার তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সবগুলো পর্বই ছিল জমজমাট।

বাংলাদেশ, ভারত, লন্ডন, জার্মানি, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত কবি, সাহিত্যিক, লেখকদের অংশগ্রহণ এবং আড্ডাবাজিতে পুরো জ্যাকসন হাইটস জমে উঠেছিলো। তিন দিনব্যাপী এই বই মেলা এবং বাংলা উৎসব শুধু বই মেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো না। বাংলা ভাষা, বাংলা বই, বাংলা সংস্কৃতিসহ পুরো বাংলাদেশই যেন উঠে এসেছে।

বাংলাদেশের সাহিত্যের একাল- সেকাল নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বাংলাদেশের মৌলবাদ, উগ্রজঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেয়া হয়েছে। আবার তার কঠোর সমালোচনাও করা হয়েছে।

বই মেলায় সম্মাননা জানানো হয়েছে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে। প্রথমবারের মত ঘোষিত চ্যানেল আই ও মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। সম্মাননা জানানো হয়েছে সহযোদ্ধা ডা. ডেভিড নেলিনকে। তিন দিনের ঠাসা অনুষ্ঠান। সময়ের অভাবে কোন আলোচনাই উপসংহারে পৌঁছাতে পারেনি।

শোভাযাত্রা ছিল চোখে পড়ার মতো। মানুষের উপস্থিতিও ছিলো তেমন। তৃতীয় দিনে পড়ন্ত বিকেলে যেন মেলায় মানুষের ঢল নেমেছিলো। মেলায় যেন হাঁটাই যাচ্ছিলো না, কি মূল মঞ্চে, কী ছোট মঞ্চে, কী মেলায়। সেইদিক থেকে  ধন্যবাদ পেতেই পারেন আহবায়ক হাসান ফেরদৌস।

ফিতা কেটে ও ২৫টি বেলুন উড়িয়ে বই মেলা এবং আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপন্যাসিক সেলিনা হোসেন। বই মেলা এবং বাংলা উৎসবের ২৫ বছর পূর্তিতে ২৫টি মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বই মেলার শুভ সূচনা করা হয়।

২৫ টি মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন প্রধান  সেলিনা হোসেন, বিশিষ্ট লেখক ও কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা রামেন্দু মজুমদার, লেখক রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়. ড. নূরন নবী, লেখক অর্বিন ঘোষ, ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, একুশে পদক প্রাপ্ত নাট্যকার জামাল উদ্দিন হোসেন, সময় প্রকাশনির প্রধান নির্বাহী ফরিদ আহমেদ,  কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকালের সভাপতি সত্যম রায় চৌধুরী, অধ্যক্ষ আব্দুস সেলিম, লেখক মোহিত কামাল, ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার, কবি গুলতেনিক খান, আমীরুল ইসলাম, লেখক ফেরদৌস সাজেদীন, কবি ইকবাল হাসান, কিশোর ভারতী সম্পাদক ও পত্র ভারতীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ত্রিদিব কুমার চ্যাটার্জি, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা সমিতির সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন, মোঃ মনিরুল হক, তাহমিনা জামান, মোস্তফা চৌধুরী, মাহফুজুল বারী, সৈয়দ আল ফারুক ও বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী কমলিনী মুখপাধ্যায়।

bangla-3

যে ২৫ জন লেখক, কবি এবং উপন্যাসিক ২৫টি মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বই মেলার উদ্বোধন করেন তাদের ২৫টি উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, এই বই মেলা গত ২৫ বছর ধরে এই নিউইয়র্কে হচ্ছে। জাতির জনক শেখ মুুজিবুর রহমানের ডাকে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। সেই স্বাধীনতা লাভের কারণেই আজকে নিউইয়র্কের বই মেলায় যোগ দিতে পেরেছি।

রঞ্জন বন্দোপাধ্যায় বলেন, এই সুন্দর একটি আয়োজনের জন্য বিশ্বজিত সাহা এবং মুক্তধারাকে ধন্যবাদ।

রোকেয়া হায়দার বলেন, দেখতে দেখতে ২৫ বছর চলে গেল। আমার এক সময়ের সহকর্মী বিশিষ্ট লেখিকা দিলারা হাশেম আমাকে বলতেন, যাবেন নাকি নিউইয়র্কের বই মেলায়। আমি বললাম যেখানে বাংলা ভাষার জয়গান হবে, বাংলাদেশের জয়গান হবে, বাংলা সংস্কৃতির জয়গান হবে সেখানে আমি কি না গিয়ে পারি।

তাসমিমা হোসেন বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, কলকাতা এবং নিউইয়র্কসহ অন্যান্য দেশে বসবাসকারী বাংলা ভাষার কবি, লেখক এবং সাহিত্যিকরা এসেছেন। এটা আমার কাছে আনন্দের। আমি ভেবেছিলাম নিউইয়র্কে শীত কাঁপবো কিন্তু এখন দেখছি সম্মিলিত উচ্ছ্বাসে রক্তের শিহরণ।

রামেন্দু মজুমদার বলেন, বড় কাজ একজনই শুরু করে। বাংলাদেশে বই মেলা শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের মুক্তধারার চিত্তরঞ্জন সাহা আর নিউইয়র্কে শুরু করেছেন আমেরিকার মুক্তধারার বিশ্বজিত সাহা।

অর্ভিন ঘোষ বলেন, সারা বছর আমরা এই বই মেলার অপেক্ষায় থাকি।

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান বলেন, বই মেলা হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্যের মেলা।

ইকবাল হাসান বই মেলা ও বাংলা উৎসবের সাফল্য কামনা করেন।

আলমগীর শিকদার লোটন বলেন, বাংলাদেশ থেকেই আমরা শুনতাম নিউইয়র্কের বই মেলার কথা। এবার এসে দেখলাম। বিশ্বজিত সাহা ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশন বাংলা ভাষা চর্চা ও বিস্তারে যে ভূমিকা পালন করছে তা সত্যিই অবিস্মরণীয়।

গুলতেনিক খান বলেন, আমার কাছে খুব ভাল লাগছে। প্রবাসে যেন এই ধারা অব্যাহত থাকে।

অধ্যক্ষ আব্দুস সেলিম বলেন, এই ধরনের সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন আয়োজন দেখে আমি অভিভূত।

আনিসুল হক বলেন, আমাকে নিউইয়র্কের বই মেলায় দাওয়াত দিতে হয় না, আমি নিজের উদ্যোগেই চলে আসি।
লুৎফর রহমান রিটন বলেন, বই মেলা আমার জীবনের সাথে জড়িত। যেখানেই বই মেলা হয় সেখানেই আমি চলে যাই। আমার আগ্রহের কেন্দ্র হচ্ছে একুশের বই মেলা, তার সম্প্রসারণ হচ্ছে নিউইয়র্ক বই মেলা।

নিক গোলাটা নিউইয়র্কের মেয়র ব্লাজিও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, নিউইয়র্ক সিটি বাংলাদেশী কম্যুনিটির সংখ্যা বাড়ছে এবং তারা নিউইয়র্ক সিটির উন্নয়নে সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। যে কারণে সিটি মেয়র বাংলাদেশীদের সাথে রয়েছে। তিনি সিটি মেয়রের পক্ষ থেকে বই মেলা এবং আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব উপলক্ষে একটি সাইটেশন মেলার আহবায়ক হাসান ফেরদৌসের কাছে হস্তান্তর করেন। যাতে ২০মে-কে আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব ও বইমেলা ডে হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

এবারের  বই মেলা এবং বাংলা উৎসবে একাত্তরের সহ মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের আকৃত্রিম বন্ধু আলবেনি মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর এমেরিটাস ড. ডেভিড লেলিনকে তার অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। তাকে সম্মাননা জানান এবং উত্তরণী পরিয়ে দেন দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও অনন্যার সম্পাদক তাসমিমা হোসেন ও বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা রামেন্দু মজুমদার।

ড. ডেভিড লেলিন তার বক্তব্যে বলেন, কিভাবে বাল্টিমোরে যুদ্ধজাহাজ না যাওয়ার জন্য তারা আন্দোলন করেছিলেন, কীভাবে হোয়াইট হাউজের সামনে বিক্ষোভ করেছিলেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট নিক্সসন পাকিস্তানে পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন, তার প্রতিবাদ করেছি এবং আমাদের সাথে ছিলো তৎকালীর সিনেটর কেনেডিসহ আরো বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা। আমাদের পুরোপুরি সাহায্য করেছিলো নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট।

আহবায়ক হাসান ফেরদৌস মেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বই মেলা নিয়ে ষড়যন্ত্র কম হয়নি। কিন্তু যারা বই মেলার সাথে নিঃশর্তভাবে ছিলেন তারাই এটাকে সফল করেছেন।

bangla-5

’যদি তোর গান শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে’ উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন শফি চৌধুরী, দিঠি হাসনাত, সাবরিনা রহমান, তাসনিম আহমেদ, গুঞ্জরী সাহা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান জাগরণে চন্দ্রা ব্যানার্জির পরিচালনায় ছিলো অনিন্দ্য সুন্দর ও চোখ ধাঁধানো নৃত্যাঞ্জলি। অংশগ্রহণ করেন নতুন প্রজন্মের অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন নুহা কাওসার, লিওনা মুহিত, সারেঙ্গী রোহান মিশ্র, গানে প্রিয়া সাহা এবং নৃত্যে দেবলীনা চন্দ। নবীন শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গুলতেকিন খান।

বই মেলার ও আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসবের উদ্বোধনের পূর্বে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রাটি জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার সিটি প্লাজা থেকে শুরু হয়ে ৬৯ স্কুলের অডিটোরিামে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা বাংলার ঐতিহ্য সাজ ও মুখ, মুখোশ ও ঢোল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি যখন জ্যাকসন হাইটসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তখন দুই পাশে দাঁড়িয়ে মানুষ অভিনন্দন জানায় অন্যদিকে বিদেশীরা উৎসক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের শোভাযাত্রাটি ছিলো সন্দুর এবং বর্ণাঢ্য।

শোভাযাত্রায় বক্তব্য রাখেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, তাসমিম হোসেন, গুলতেকিন খান, নিউইয়র্ক মেয়র বিল ডি ব্লাজিওর প্রতিনিধি নিক গোলাটা, কমলিনী মুখার্জি, জামাল উদ্দিন হোসেন, নাজমুন নেসা পেয়ারি, অধ্যক্ষ আব্দুস সেলিম, আনিসুল হক, লুৎফর রহমান রিটন,  ড. নূরন নবী, গাজী মাজহারুল ইসলাম,  ইকবাল হাসান, সালমা বানী, জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান, সউদ চৌধুরী প্রমূখ। শোভাযাত্রার অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন হাফিজ ইয়াক্তি।

দ্বিতীয় দিন

দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু প্রবাসে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের শিশু- কিশোরদের মধ্যে বয়স ও বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বে ছিলেন নাসরিন চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন, জেবু চৌধুরী, সুলেখা পাল, পারভীন সুলতানা, আল্পনা গুহ, কুলসুম পপি ও রাহাত কাজী। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া শিশু- কিশোরদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলি।

bangla-4

ফাহিম রেজা নূরের সঞ্চালনায় কবি রফিক আজাদ মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় লেখক, পাঠক এবং প্রকাশক ‘মুখোমুখি’। অতিথি ছিলেন সেলিনা হোসেন, আনিসুল হক, মনিরুল হক, ফরিদ আহমেদ, তাসমিম হোসেন, টিউলিপ চৌধুরী, নাজমুন নেসা পেয়ারি ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ‍াচার্য্য আনোয়ার হোসেন।

আদনান সৈয়দের সঞ্চালনায় এ বছরের নতুন বই নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন সেলিনা হোসেন, আনিসুল হক, রামেন্দু মজুমদার। নতুন লেখকদের মধ্যে উপস্থিত থেকে নিজ বই সম্পর্কে বলেন, কবি তমিজ উদ্দিন লোদী, সাংবাদিক আহমেদ মুসা, কবি ফকির ইলিয়াস, জসীম মল্লিক, কবি শামস আল মমীন, কাজী জহিরুল ইসলাম, শফিউল আলম, ওবায়দুল্লাহ মামুন, রওশন হাসান, জুলি রহমান, আশরাফ আহমেদ, মনিজা রহমান, ডা. কৌশিক সেন, সাজ্জাদ বিপ্লব, আহমেদ সবুর, আলম সিদ্দিকী, রিমি রুম্মান।

বিশিষ্ট ছড়াকার মঞ্জুর কাদেরের পরিচালনায় স্বরচিত কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এ বি এম সালেহ উদ্দিন, আনোয়ার সেলিম, চারু হক, ফারহানা পলি, খালেদ শরফুদ্দিন, কবিতা হোসেন, লাকি সেরনিয়াবত, লালন নূর, সালমা বাণী, মামুন জামিল, মনিজা রহমান, নাসির উল্যাহ মোহাম্মদ, নূপুর কান্তি দাস, নূরুল ইসলাম পাশা, ওমর শামস, কাজী জহিরুল ইসলাম, রওশন হাসান, রিপা নূর, সাজেদ কামাল, সাজ্জাদ বিপ্লব, শাহ আলম দুলাল, শামস চৌধুরী, শরিফুল আলম, স্বপ্ন কুমার, সোনিয়া কাদের, সৈয়দ আহমেদ জুয়েদ, তমিজ উদ্দিন লোদী, ভায়লা সেলিনা লিজা প্রমুখ।

সউদ চৌধুরীর পরিচালনায় আলাপচারিতা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে প্রবাসে জন্ম নেয়া নতুন প্রজন্মের দুই প্রতিনিধি। একজন নিউজার্সির কাউন্সিলম্যান অন্যজন হচ্ছে চ্যানেল ১১ এর সাংবাদিক।

আমেরিকায় বাংলার মুখ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে তার রোল মডেল হচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কাউন্সিলওম্যান তাহসিনা আহমেদও বললেন, তার রোল মডেল ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

নতুন প্রজন্মের বই নিয়ে আলোচনা করেন অধ্যাপক আব্দুস সেলিম এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনায় ছিলেন বাঙালির সম্পাদক কৌশিক আহমেদ।

আলাপচারিতা ও গানের অনুষ্ঠানটি মাতিয়ে রাখেন শিল্পী তাজুল ইমাম। তিনি লোকসঙ্গীতের বিভিন্ন ভার্সন তুলে ধরেন এবং গেয়ে শুনান। অসাধরণ এই অনুষ্ঠানটি যখন জমে উঠছিলো ঠিক তখনই সময়ের কাটা হস্তক্ষেপে যবনিকাপাত ঘটে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন আনিসুল হক এবং আলোচক ছিলেন রামেন্দু মজুমদার।

দলীয় অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে রঞ্জনী। রঞ্জনীর পরেই লেখক ফেরদৌস সাজেদীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় কেন লিখি অনুষ্ঠানটি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন লুৎফর রহমান রিটন, মোহিত কামাল, সৈয়দ আল ফারুক, রিফাত কামাল সাইদ।

আহবায়ক হাসান ফেরদৌসের পরিচালনায় লেখকের দায়িত্বরোধ নিয়ে দীর্ঘ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। সেতার ও তবলার সমন্বয়ে যন্ত্রানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ডেউজি প্যারাড়ি ও পিনাকপাণি গোস্বামী।

রানু ফেরদৌসের সঞ্চালনায় নারী লেখক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তাসমিম হোসেন ও গুলতেনিক খান। আলোচনায় তারা লেখক জীবনের গল্প তুলে ধরেন।
নীরা কাদরির পরিকল্পনায় কবি শহীদ কাদরির কবিতা নিয়ে অনুষ্ঠান ‘কবিতাই আরাধ্য আমার’ অনুষ্ঠানে কবি শহীদ কাদরির কবিতা আবৃত্তি করেন ক্রিস্টিনা রোজারিও, কারা রোজারিও, মিজানুর রহমান বিপ্লব, আবীর আলমগীর, এজাজ আলম ও হোসেন শাহরিয়ার তৈমুর। চমৎকার আবৃত্তির পাশাপাশি কবি শহীদ কাদরির বর্ণনা ছিলো অভূতপূর্ব। কবি শহীদ কাদরী প্রথম এধরণের কোন অনুষ্ঠান করলেন সকলের জন্য উন্মুক্ত স্থানে।
গানের ভেলায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব।

দীপন (ফয়সাল আরেফিন দীপন) কক্ষে ছিলো লুৎফর রহমান রিটনের পরিচালনায় ছড়ার যাদু পাঠ। অংশগ্রহণ করেন আমিরুল ইসলাম, সৈয়দ আল ফারুক, মনজুর কাদের ও শাহ আলম দুলাল।

বই মেলা : ঢাকায়, কলকাতা, নিউইয়র্ক ও বার্লিনে– কথোপকোথন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ফরিদ আহমেদ। আলোচনায় ছিলেন নাজমুন নেসা পিয়ারী, মোঃ মনিরুল ইসলাম, আহমেদ মাহমুদুল হক, জহিরুল আবেদীন জুয়েল।
আমাদের রবীন্দ্র নাথ নিয়ে আলোচনা করেন রঞ্জন বন্দোপাধ্যায় ও কমলিনী মুখোপাধ্যায়। তারা রবীন্দ্র নাথের সঙ্গীত জীবন ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেন। জি এইচ আরজুর সঞ্চালনায় জেনোসাইন ১৯৭১ নিয়ে আলোচনা করেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, সেলিনা হোসেন, ওবায়দুল্লাহ মামুন ও তাজুল মোহাম্মদ।

দ্বিতীয় দিনের সফল সমাপ্তি টানেন শিল্পী কমলিনী তার অনিন্দ্য সুন্দর রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে।

তৃতীয় দিন

তৃতীয় দিনের বই মেলার শুরু হয় বই মেলায় আসা কবি ও লেখকদের প্রাতরাশ ও আডডায়। এই আড্ডায় ছিলো মজার গল্প, অন্যের চরিত্র হননের ভালগার গল্প। নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন সেলিনা হোসেন, রামেন্দু মজুমদার, গুলতেকিন খান ও আহবায়ক হাসান ফেরদৌস।

কবি তমিজ উদ্দিন লোদির সঞ্চালনায় স্বরচিত কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন আমিরুল ইসলাম, আলম সিদ্দিকী, আতিক কাজী, আতিকুর রহমান সালু, বাদিউজ্জামান নাসিম, কবি ফকির ইলিয়াস, হুমায়ুন কবির, জুলি রহমান, খান শওকত, খিজির হায়াত, খন্দকার জাহাঙ্গীর, কৌশিক সেন, লিয়াকত আলী, লুবনা কায়জার, লুতফা সাহানা, মোহিত কামাল, মাকসুদা আহমেদ, ইকবাল হাসান, সৈয়দ আল ফারুক, মনজুর কাদের, মিনহাজ আহমেদ সাম্মু, মিশুক সেলিম, এ কে এম আনাম, পপি শাহিনা, শাহীন ইবনে দিলওয়ার, শামস আল মমীন, স্বপন চক্রবর্তী, সৈয়দ মামুনুর রশিদ, তাহমিনা জামান প্রমুখ।

bangla-6

ইভান চৌধুরীর পরিচালনায় কবিতা আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন গোপন সাহা, ফারুক আজম, আনোয়ার হোসেন লাভলু ও জি এইচ আরজু।

ডানা ইসলামের উপস্থাপনায় নজরুলের গানের ওয়ার্কশপ নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট নজরুল বিশেষজ্ঞ সুজিত মোস্তফা। পাশে ছিলেন নৃত্য শিল্পী মুনমুন আহমেদ।

নতুন বই নিয়ে জসীম মল্লিকের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়। অংশগ্রহণ করেন ঘটি বাহিনীর লেখক ড. প্রার্থ ব্যানার্জি, জীবন এতো ছোট কেন’র লেখক ডা. সিনহা আবুল মনসুর, মাহফুজুল বারী, মুস্তফা চৌধুরী, মিলি সুলতানা, শফিউল আলম, রোকেয়া জামান, খান শওকত, শামীম আল আমিন।

বই মেলার সবচেয়ে আকর্ষীণ ইভেন্ট ছিলো চ্যানেল আই/ মুক্তধারা বই মেলা ২০১৬ সাহিত্য পুরস্কার। এই পুরস্কার ঘোষণার পূর্বে হাসান ফেরদৌস বললেন, ভোটের মাধ্যমে কবির নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। মেলা কমিটির ১১ জন সদস্য এই ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। জানা গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই কবির মধ্যে ভোটের প্রার্থক্য ছিল ১।

আমিরুল ইসলাম ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এই পুরস্কার পেয়েছেন কবি নির্মেন্দু গুণ। তিনি এই মেলায় নেই। ঢাকায় একটি লাইফ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে এই সম্মাননা তুলে দেয়া হবে। এই পুরস্কারের মূল্যমান ছিলো ২ লাখ টাকা। এই সময় স্টেজে ওঠে বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন। ঘোষণা দেন তিনি আরো ৩ লাখ টাকা দেবেন। পুরস্কারের অর্থ দাঁড়াবে ৫ লাখ টাকা।

কবি নির্মেন্দু গুণ ফেইস বুকে লিখে স্বাধীনতা পুরস্কার পেলেন, আর নিউইয়র্কে গোপন ভোটের মাধ্যমে ‘চ্যানেল আই-মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার’ পেলেন।

বই মেলায় বিশেষ সম্মাননা জানানো হয় কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে। হাসান ফেরদৌসের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে ফরিদ আহমেদ বলেন, সেলিনা হোসেন হচ্ছেন বাংলাদেশের সৃশীনশীল ও সত্যবাদী একজন লেখক। তিনি এমনই একজন লেখককে যাকে পা ধরে শ্রদ্ধা জানাতে ইচ্ছে করে।

রামেন্দু মজুমদার বলেন, সেলিনা হোসেন এবং আমি লক্ষীপুরের মানুষ। আমরা একই সাথে রাজপথে আন্দোলন করছি। তিনি বাংলাদেশের একজন অসাধারণ কথা সাহিত্যিক।

সেলিনা হোসেন বলেন, আমি অভিভূত, মুগ্ধ। আপনাদের এই ভালবাসায় আমি ঋণি হয়ে গেলাম। সেলিনা হোসেনকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন লেখক সাংবাদিক মনজুর আহমেদ।

আবার আসিব ফিরে জীবনান্দ দাসের কবিতায় আবৃত্তি করে রামেন্দু মজুমদার। আর নৃত্যে ও পোশাকে বাংলাদেশ ও প্রকৃতিকে অতুলনীয় ভাবে তুলে ধরেন নতুন প্রজন্মের ভার্সেটাইল শিল্পী সেমন্তী ওয়াহিদ।

রবীন্দ্র নাথের গানে রাগের ব্যবহার পরিবেশনায় ছিলেন পারমিতা মুমু ও শ্রুতিকনা দাস।

নিনি ওয়াহেদের সঞ্চালনায় গণতন্ত্র ও উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রামেন্দু মজুমদার, মোহাম্মদ জিয়াউল হক, ড. নুরন নবী, ড. নজরুল ইসলাম ও সেলিম রেজা নূর, তাকসিম খান।

পন্ডিত রাম কানাই দাসের উপর শ্রদ্ধা নিবেদন করে সঙ্গীত পরিবেশন করে সঙ্গীত পরিষদ।

টেলিভিশন কী বাংলা সংস্কৃতি বিকাশে প্রতিবন্ধক শীর্ষক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন লুৎফর রহমান রিটন, রামেন্দু মজুমদার, আমীরুল ইসলাম ও অধ্যাপক আব্দুস সেলিম। জামাল উদ্দিন হোসেনের পরিচালনায় আলোচবৃন্দ বলেন, টেলিভিশন কখনো সংস্কৃতি বিকাশের প্রতিবন্ধকতা ছিলো না বরং সহায়ক। এ ছাড়া টিভিগুলো অন্যদেশের সাথে আমাদের দেশের হিংসা-বিদ্বেষ কমিয়ে এনেছে।

জীবন চৌধুরীর পরিচালনায় গানের ভেলা অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন জুঁই সাহা, মোহাম্মদ দেলওয়ার, শিখা আহমেদ ও নাহিদ নাজিয়া।

কবি ইকবাল হাসান ও হাসান ফেরদৌসের পরিচালনায় মুখোমুখী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন সেলিনা হোসেন, আনিসুল হক, রঞ্জন বন্দোপাদ্যায়, গুলকেতিন খান ও লুৎফর রহমান রিটন।
আনিসুল হক বলেন, ক্রিকেটে আমরা বিস্ময়বালক মুস্তাফিজকে পেয়েছি, আমাদের মেয়েরা ফুটবলে ভারতকে ৪ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে, ক্রিকেট সেরা দলগুলোকে হারাচ্ছে, সুতরাং এ জাতি পরাস্ত হতে পারে না। তবে এইটুকু আমি বলতে পারি, আগামী ২০ বছরে বাংলাদেশ শ্রেষ্ঠ দেশে পরিণত হবে।

ফেরদৌস সাজেদীনের সঞ্চালনায় গ্রন্থ পরিচয়ে অংশগ্রহণ করেন মাহফুজুল বারী, মুস্তফা চৌধুরী, কৌশিক সেন, ড. নজরুল ইসলাম। অতিথি লেখক ছিলেন রঞ্জন বন্দোপাধ্যায় ও আব্দুস সেলিম।

কবি ফকির ইলিয়াসের প্রাণবন্তু সঞ্চালনায় লিটিল ম্যাগাজিন ঃ একটি মূল্যায়ণ শীর্ষক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. হুমায়ুন কবীর, ত্রিদিব কুমার চট্টপাধ্যায়, সৈয়দ মামুনুর রশীদ, মাহবুব লীলেন, মোহিত কামাল, শামস আল মমীম ও তমিজউদ্দিন লোদী।

টাইম টিভির পরিচালক আবু তাহেরের পরিচালনায় খসরুজ্জামান চৌধুরী স্মরণে একটি শ্রদ্ধাঞ্জলী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন সেলিনা হোসেন, ড. নুরুন নবী, এ বি এম সালেহ উদ্দিন, বাবুল আলমগীর ও তাহমিনা জামান। অনুষ্ঠানে সেলিনা হোসেন খসরুজ্জামান চৌধুরী কীভাবে ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে তার ৫টি গল্প নিয়ে একটি ইংরেজি বই প্রকাশ করেছিলেন সেই কষ্টের কাহিনী তুলে ধরেন। তাহমিনা জামান তার স্মৃতিচারণ করেন।

আহবায়ক মেলাকে সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন। কিন্তু তিন দিনের মিলন মেলার যবনিকাপাত ঘটে বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী সামিনা চৌধুরী তার জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে।

শিল্পীকে ক্রেস্ট প্রদান করেন নাসরিন চৌধুরী এবং ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান রোজি।

তিন দিনের বই মেলার শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন তানভীর শাহীন। শিল্পীদের বিভিন্ন যন্ত্রাংশে সহযোগিতা ছিলেন কীবোর্ডে মাসুদ, অক্টোপ্যাডে রীদ, তবলায় পিনাকপানি গোস্বামী, মন্দিরায় শহীদ উদ্দিন, গীটারে মির্জা মনু, ঢোলে শফিক মিয়া। তিনদিনের পুরো অনুষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনায় ছিলেন নিনি ওয়াহেদ। আহ্বায়ক ছিলেন হাসান ফেরদৌস। অনুষ্ঠান সমন্বয়কারী ছিলেন সেমন্তী ওয়াহেদ। সহযোগিতায় ছিলেন সাবিনা হাই উর্বি ও আশরাফুল হাবিব চৌধুরী।

২৫তম বইমেলায় রেকর্ড সংখ্যক ২২টি বইয়ের স্টল

বইমেলার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে যেসব প্রকাশক যোগ দিয়েছেন, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি ও আকাশ পাবলিশার্স আলমগীর সিকদার লোটন,  আহমেদ মাহমুদুল হক, মাওলা ব্রাদার্স, ফরিদ আহমেদ, সময় প্রকাশন, মেসবাহ উদ্দীন, অঙ্কুর ও চারদিক প্রকাশনা, মোঃ মনিরুল হক, অনন্যা,  স্টুডেন্ট ওয়েজে-এর মাশফিক উল্লাহ তন্ময়, নালন্দার রেদওয়ানুর রহমান জুয়েল, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের জহিরুল আবেদীন জুয়েল, সম্রাজ্ঞী প্রকাশনার সুলতানা রিজিয়া, ধ্রুবপদ-এর আবুল বাশার ফিরোজ শেখ, অনিন্দ্রপ্রকাশ এর আফজাল হোসেন, চন্দ্রাবতী পাবলিশার্স এর পক্ষে আহমেদ মুসা বইমেলায় যোগ দেন।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে যোগ দিয়েছেন কলকাতা বইমেলার সাধারণ সম্পাদক ও পত্রভারতীর স্বত্বাধিকারী ত্রিদিব কুমার চট্টপাধ্যায় ও সম্পর্ক পাবলিশাস এর সুনন্দন রায় চৌধুরী।

আমেরিকা থেকে যারা বইমেলায় স্টল করেন তাদের মধ্যে ছিল মুক্তধারা-নিউইয়র্ক, ইভানজ্যুলিক্যাল বেঙ্গলী চার্চ, ঘুংঘুর, প্রীতম প্রকাশ, স্বপ্নশিকারী, শ্রীচিন্ময় সেন্টার, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও আমেরিকার মূলধারার একটি প্রকাশনা সংস্থা। মোট ২৪টি বইয়ের পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা ২৫তম বইমেলায় অংশগ্রহণ করে।

এ ছাড়া কলকাতা থেকে ১টি তিয়ারা বুটিক এবং বাংলাদেশ থেকে একটি আব্বাস বুটিক এবং আমেরিকার সাইদা বুটিক ও সোমা বুটিক নিয়ে মোট ৪টি শাড়ি কাপড়ের স্টল অংশ নেয়। বাংলাদেশের প্রাণ আরএফএল, নিউইয়র্কের ওয়েলকেয়ার, মেয়র অফিস, কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান টেকনোসফট এবং একটি আট-এর প্রদর্শনীসহ মোট মেলায় ৩২টি স্টল স্থান পায়।

পঁচিশ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যারা স্পন্সর করেছেন তারা হলো চ্যানেল আই, প্রাণ আরএফএল, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন, জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান-এ সহযোগিতা করেন মোহাম্মদ রাশেদ। শিল্পী সামিনা চৌধুরীর অনুষ্ঠানটি সহযোগিতা করেন লিগ্যাল এসিস্ট্যান্ট নাসরিন আহমেদ। জ্যাকসন হাইটসর মেরিট কাবাব, ইত্যাদি, এবং জ্যামাইকার সাগর রেস্টুরেন্ট, এবং ঢাকা ফুড অতিথিদের আপ্যায়নে খাবার সরবরাহ করেছে।

শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ফলাফল

বাংলা লিখন প্রতিযোগিতা
বাংলা প্রতিযোগিতা ক বিভাগ (৫ থেকে ৮ বছর) প্রথম পুরস্কার প্রতিযোগিতা স্মরণীকা চক্রবর্তী, দ্বিতীয় পুরস্কার  পেয়েছে যৌথভাবে জুনায়রা সাবাহ রাওদা ও শৈলী মন্ডল। তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে মুন ভাই। খ বিভাগে (৯ থেকে ১২ বছর)  প্রথম পুরস্কার লিওনা মুহিত, দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে নাহরীন ইসলাম ও তৃতীয় হয়েছে শিহান জুহায়ের। বিচারক ছিলেন: মঞ্জুর কাদের ও এবিএম সালেহউদ্দিন।

ছড়া গান প্রতিযোগিতা
ক বিভাগে (৫ থেকে ৮ বছর)  ছড়া গান প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে প্রমিত আচার্য্য, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে মুন জাবিন হাই। তৃতীয় স্থান অর্জন করে স্মরণীকা চক্রবর্তী। খ বিভাগে (৯ থেকে ১২ বছর)  প্রথম বিভাগ অর্জন করে হাফসা শাহরুন, দ্বিতীয় নাবিলা হামিদ ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে লিওনা মুহিত। গ (১৩ থেকে ১৬ বছর)  বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করে প্রার্থনা নাথ, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে তাসফিয়া রুবায়েরত ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে জেরিন মাইসা। বিচারক ছিলেন: জাবেদ ইকবাল ও তানভীর শাহীন।

আবৃত্তি প্রতিযোগিতা
ক বিভাগে (৫ থেকে ৮ বছর)  প্রথম স্থান অর্জন করে জনম সাহা। দ্বিতীয় স্থান প্রমিত মহান আচার্য্য ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে স্মরণীকা চক্রবর্তী। খ বিভাগে (৯ থেকে ১২ বছর)   প্রথম স্থান অর্জন করে জনম সাহা, দ্বিতীয় লিওনা মুহিত ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে নাবিলা হামিদ। গ বিভাগে (১৩ থেকে ১৬ বছর)   প্রথম স্থান অর্জন করে তাসফিয়া রুবাইয়াৎ, দ্বিতীয় জেরিনা মাইসা ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে নূহা কাউসার।  বিচারক : মিজানুর রহমান বিপ্লব ও কারা রোজারিও।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
ক বিভাগে (৫ থেকে ৮ বছর)  চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে প্রমিত মোহন আচার্য্য, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে শুভশ্রী সাহা ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে মুন জাবিন হাই। খ বিভাগে (৯ থেকে ১২ বছর)  নাইম আজান, দ্বিতীয় রুশমিকা নাবিহা ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে সিহান জুহায়ের। গ বিভাগে (১৩ থেকে ১৬ বছর)   প্রথম স্থান অর্জন করে সঙ্গীতা চক্রবর্তী, দ্বিতীয় অমৃতা রায় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে তাসনিয়া মুসকান।  বিচারক : আকতার আহমেদ রাশা ও আজিজুর রহমান তারিফ।

সঙ্গীত প্রতিযোগিতা
ক বিভাগে (৫ থেকে ৮ বছর) রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত প্রতিযোগিতায়  প্রথম স্থান অর্জন করে স্মরনীকা চক্রবর্তী, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে মুন জেবিন হাই ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে আদিয়া আফরিন। খ বিভাগে (৯ থেকে ১২ বছর)  আধুনিক-ফোক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে লিওনা মুহিত। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে দেবিপ্রিয়া পোদ্দার ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে লিওনা মুহিত। গ গ্রুপে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে জেরিন মাইশা ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে অমৃতা রায়। বিচারক : শহীদ উদ্দীন ও সেমন্তী ওয়াহেদ।

সম্পাদনা : শাহ মতিন টিপু

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts