ডিসিকে ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করায় প্রতিবাদ করলেন শিক্ষক

আমিরুল ইসলাম: রংপুর জেলা প্রশাসককে স্যার বলতে বাধ্য করার প্রতিবাদ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। তার এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও।

অবস্থান কর্মসূচির প্রায় এক ঘণ্টা অতিক্রমের পর জেলা প্রশাসক এসে উদ্ভূত পরিস্থিতির নিরসন করেন এবং ভবিষ্যতেও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও জানান।

বুধবার (২২ মার্চ) রাত পৌনে ৯ টার দিকে জেলা প্রশাসকের মূল ফটকে অবস্থানরত শিক্ষক উমর ফারুকসহ অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীদের কাছে আসেন রংপুরের ডিসি ড. চিত্রলেখা নাজনীন। ভুল বোঝাবুঝি বলে ঘটনাটির নিরসন করেন। পরে প্রতিবাদকারী তাদের অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেন।

এসময় অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি স্যার সম্বোধন করতে বলিনি। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি।’

এবিষয়ে শিক্ষক উমর ফারুক বলেন, ‘আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে তার সঙ্গে দেখা করতে যাই একটি স্কুলের বিষয়ে। রংপুরের প্রথম শহীদ শংকু সমজদারের নামে প্লে গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত গত তিন বছর থেকে একটি স্কুল পরিচালনা করি। সেই স্কুলের কাজে গিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসককে স্যার সম্বোধন না করায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। এ সময় এ বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। পরে আমি সেখান থেকে বেরিয়ে এসে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে একাকি অবস্থান কর্মসূচি শুরু করি। বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক নিচে নেমে এলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন শিক্ষকও সেখানে উপস্থিত হন। পরে জেলা প্রশাসক এসে এই ঘটনার ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি হবেনা বললে উদ্ভুত পরিস্থিতির অবসান হয়।’

উল্লেখ্য, বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসকের কক্ষে সাক্ষাৎ করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক উমর ফারুক। আলাপ শেষে বিদায়ের সময় স্যার না বলে আপা বলাকে কেন্দ্র করে এই প্রতিবাদের সূত্রপাত হয়‌। পরের জেলা প্রশাসকের কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদস্বরূপ কার্যালয়ের মূল ফটকে ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করার অভিযোগ তুলে অবস্থান কর্মসূচিতে প্ল্যাকার্ড লিখে কন্যাসহ বসেন ওই শিক্ষক। এই অবস্থান কর্মসূচিতে বসার ৩০ মিনিটের মধ্যেই ডিসি অফিসের প্রধান ফটকে বেরোবির শিক্ষক শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেন।‌

অবস্থান কর্মসূচিতে হাতে নিয়ে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিলো- ‘রংপুরের জেলা প্রশাসক ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করায় অবস্থান কর্মসূচি।’

 

 

 

Print Friendly

Related Posts