ফের পায়ের জাদুতে পুরো বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর লিওনেল মেসি। নান্দনিক ছন্দে মেসি কেড়ে নিয়েছেন ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়। এবার ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শততম গোলের পাশাপাশি হ্যাটট্রিক করেছেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইনদের দানবীয় ফুটবলের কাছে পাত্তাই পায়নি কুরাসাও। ম্যাচের প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক করেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এই অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ৭-০ গোল ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠে ছেড়েছে লিওনেল স্ক্যালোনির শিষ্যরা।
বুধবার (২৯ মার্চ) বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টায় নিজেদের মাঠে সান্তিয়াগো দেল এস্তেরোতে নেমেছিল আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৫ গোল করে উৎসবে মাতে কাতার বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয়ার্ধে আসে আরও দুই গোল। তবে সফরকারীদের গোলকিপার এলয় রুম দানবীয় ভূমিকায় ৯টি সেভ না করলে লে আলবিসেলেস্তেদের জয়ের ব্যবধান আরও বেশি হতে পারতো!
ম্যাচের ২০তম মিনিট থেকে ৩৭তম মিনিটের মধ্যেই হ্যাটট্রিক তুলে নেন আর্জেন্টাইনদের অধিনায়ক। তবে প্রথম লক্ষ্যভেদের মধ্য দিয়ে মেসি তার ক্যারিয়ারে শততম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ১৭৪ ম্যাচে মেসির গোল সংখ্যা দাঁড়ায় ১০২-এ। যদিও মেসির আগেই পর্তুগালের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো এবং ইরানের আলী দাইয়ে ১০০তম গোলের মাইলফলকে নাম লিখিয়েছিলেন।
ম্যাচে মেসির পাশাপাশি প্রথমার্ধে নিকোলাস গঞ্জালেজ এবং এঞ্জো ফার্নান্দেজ একটি করে গোল করেছেন। এ ছাড়া দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নেমেই দলের ব্যবধান বাড়ান আনহেল দি মারিয়া। আর ম্যাচের শেষ দিকে জালের দেখা পান গঞ্জালো মন্তিয়েল।
ম্যাচের ১০তম মিনিটে দুটি গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু দুটি সুযোগই মিস করেন মেসি। তবে ম্যাচের ২০তম মিনিটেই জিওভান্নি লো সেলসোর পাস থেকে ডান পায়ের শটে ক্যারিয়ারের ১০০তম গোলের দেখা পান আর্জেন্টাইন এই মহাতারকা। আর এরই মধ্যে দিয়ে মহাদেশ দক্ষিণ আমেরিকায় প্রথম ফুটবলার হিসেবে শততম গোলের মাইলফলকে নাম লেখান মেসি।
মেসির গোলের দুই মিনিট পরই আর্জেন্টাইনদের লিড বাড়ান নিকো গঞ্জালেস। হেড থেকে দলকে এগিয়ে নেন তিনি।
ম্যাচের পুরোটা সময়জুড়ে আর্জেন্টাইনরা কুরাসাওয়ের মাঝমাঠ ও রক্ষণভাগ ফাঁকা থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। আর এই সুযোগেই এসেছে ম্যাচের তৃতীয় গোলটি। ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে গঞ্জালেস ও এনজো ফার্নান্দেজের পায়ের শৈলীতে সাজানো বোঝাপড়ায় ক্যারিয়ারের অন্যতম সহজ গোলের দেখা পান সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী আর্জেন্টাইন তারকা। এর দুই মিনিট পরই মেসির দুরপাল্লার পাস থেকে গোল করেন ফাঁর্নান্দেজ।
আর দেশের হয়ে ক্যারিয়ারের নবম ও সব মিলিয়ে ৫০তম হ্যাটট্রিক তুলে নিতে মেসিও খুব বেশি সময় নেননি মেসি। লো সেলসোর দুরপাল্লার পাস থেকে ম্যাচের ৩৭তম মিনিটেই হ্যাটট্রিকের দেখা পান আকাশি-নীল শিবিরের এই মহাতারকা।
বিরতির পরও একাধিক সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টাইনরা। তবে কিছুটা টিমেতালে খেলে তা নষ্ট করে মেসির দল। শেষ দিকে ৭৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে দি মারিয়া এবং ৮৭তম মিনিটে গঞ্জালো মন্তিয়েল গোল করলে বড় জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।