বেতবুনিয়ায় ৭১ ফুট উচ্চতায় বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল দৃষ্টি কাড়ছে মানুষের

বিজয় ধর: রাঙামাটির  কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ায় সজীব ওয়াজেদ উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্রে ৭১ ফুট উচ্চতায় নির্মিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর‌্যাল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার  স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্মৃতিকে চির স্মরণীয় করে রাখতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ৭১ ফুট উচ্চতায় এ মুর‌্যালটি নির্মাণ করা হয়েছে।  এতো বেশি উচ্চতায় এর আগে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল নির্মিত হয়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এই মুর‌্যাল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

২০১৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এই মুর‌্যালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, মুর‌্যালটির চারপাশে  রয়েছে রঙ-বেরঙের ফুল দিয়ে সুসজ্জিত একটি বাগান। চারপাশে তার সবুজের সমারোহ। এটি দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেন। এখানকার সবুজ প্রকৃতি, পাখির কলরব শুনে যে কেউ বিমোহিত হবেন নিশ্চয়ই।

বাংলাদেশ স্বাধীনের পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন এই ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন।বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যালের পাশে নির্মিত বিভিন্ন ছবি সম্বলিত দেয়ালটিতে বঙ্গবন্ধুর বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভু-কেন্দ্র উদ্বোধনের দূর্লভ ছবি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনেক গুরুত্বর্পূর্ণ।  পর্যটকদের জন্যও একটি আকর্ষণীয় ও দর্শণীয় স্থান। তবে যেহেতু এলাকাটি সংরক্ষিত, মুর‌্যালটি দেখতে আসতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ভ্রমণ করা যাবে।

রাঙামাটির তরুণ সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জীবন’ এর সাধারণ সম্পাদক সাজিদ বিন জাহিদ মিকি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ৭১ ফুট উঁচু বেতবুনিয়ায় যে মুর‌্যালটি নির্মাণ করা হয়েছে সেটি রাঙামাটির জন্য একটি অনবদ্য পাওয়া। এটি যদি ভবিষ্যতে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা দেওয়া যায় তাহলে এখান থেকে পর্যটন খাতে আয়ের একটি উৎস হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে, তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধনের জন্য কাউখালীতে আসেন। সেদিন হাজারো ছাত্র জনতা স্লোগানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। তার এই স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বঙ্গবন্ধুর সুউচ্চ একটি ভাস্কর্য তৈরি করেছে। এজন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা জানান, রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ায় যে সজীব ওয়াজেদ উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র হয়েছে, সেটি তৎকালীন সময়ে (১৯৭৫ সালে) বঙ্গবন্ধু উদ্বোধন করেছিলেন। সেই সময়ে আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য আমিও রাঙামাটি থেকে গিয়েছিলাম বেতবুনিয়ায়।

নিখিল কুমার চাকমা আরো বলেন, আমার আগে যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন এবং যারা দায়িত্বে ছিলেন,তারাই এই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিলেন। তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

Print Friendly

Related Posts