বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলো বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে

বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলো বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে। আইরিশ ইনিংসে ১৬.৩ ওভার খেলা হওয়ার পর বৃষ্টি হানা দেয় চেমসফোর্ডে। অনেকটা সময় অপেক্ষা করার পরও বৃষ্টি না থামায় বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন আম্পায়াররা। নিয়ম অনুযায়ী, ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে কোনো ম্যাচের ফল বের করতে হলে কমপক্ষে ২০ ওভার করে হতে হয় দুই দলের ইনিংসে। ৩.৩ ওভারের জন্য সেটা সম্পূর্ণ হয়নি।

চেমসফোর্ডের কাউন্টি মাঠে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান করে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে সুবিধাজনক জায়গায় নেই আয়ারল্যান্ডও। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় তাদের স্কোর ছিল ১৬.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৫ রান। আরও দরকার ১৮২ রান।

ছোট পুঁজি নিয়েও প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেন বাংলাদেশি বোলারররা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পল স্টারলিংকে (১৫) মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যাচ বানান শরিফুল ইসলাম। পরের ওভারে আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নিকে (৫) বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন স্টিফেন দোহেনি আর হ্যারি টেক্টর। ৬২ বল খেলে তারা যোগ করেন ৩৬ রান। অবশেষে এই জুটিটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। ৩৯ বলে ১৭ রানের ধীর ইনিংস খেলা ওপেনার দোহেনিকে ফিরতি ক্যাচ বানান তাইজুল। বাঁহাতি এই স্পিনার উইকেট নেওয়ার পরের ওভারেই নামে বৃষ্টি।

এর আগে চেমসফোর্ডের প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি। মুখোমুখি প্রথম বলেই আউট লিটন দাস। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে প্রায় তিন সপ্তাহ কাটানোর পর এই ম্যাচ দিয়েই প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ফেরাটা মোটেও ভালো হলো না। ‘গোল্ডেন ডাক’-এ হতাশা বাড়িয়ে গেছেন।

সঙ্গী হারিয়ে আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। ওয়ান ডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়েও গিয়েছিলেন। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি। ১৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

চার নম্বরে নামেন সাকিব আল হাসান। আইপিএল ‘বিসর্জন’ দিয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে এই প্রথমবার তার মাঠে নামা। সেকারণেই ভালো করার তাড়না আগে থেকে বেশি থাকার কথা তার। সেই চিন্তা থেকেই সম্ভবত মারমুখী ভঙ্গিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন সাকিব। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। যদিও অল্পতেই থামতে হয়েছে। ভালো শুরু পেয়েও ২০ বলে ২১ রান করতে পেরেছেন। মেরেছেন ৪ বাউন্ডারি।

সাকিব না পারলেও দলের হাল ধরেছেন মুশফিকুর রহিম। চমৎকার ব্যাটিংয়ে আরেকবার দলে তার কার্যকারিতার ছাপ রাখলেন। ৫২ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে পথে ফিরিয়েছেন মুশফিক। ঠাণ্ডা মাথায় সময়োপযোগী ইনিংস খেলেছেন।

তার আগে শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়ের জুটিও রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চতুর্থ ‍উইকেটে তারা গড়েন ৫০ রানের জুটি। শান্তর বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। ৬৬ বলের ইনিংসটি বাঁহাতি ব্যাটার সাজান ৭ বাউন্ডারিতে। আর হৃদয় ৩১ বলে খেলেন ২৭ রানের ইনিংস।

মিডল অর্ডারের প্রায় সবাই ভালো শুরু পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। এই জায়গায় ব্যতিক্রম মুশফিক। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ব্যাট করে পেয়ে গেছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৪তম হাফসেঞ্চুরি। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন ৬১ রানের ঝলমলে ইনিংস। জশ লিটলের বলে আউট হওয়ার আগে ৭০ বলের ইনিংসটি সাজান ৬ বাউন্ডারিতে।

মুশফিকের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ চেষ্টা করেছেন। তিনি থামেন ২৭ রানে। ৩৪ বলের ইনিংসে মেরেছেন চার বাউন্ডারি। এছাড়া অবদান রেখেছে তাইজুল ইসলাম (১৪) ও শরিফুল ইসলামের (১৬) দুটো ইনিংস।

আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে সফল বোলার লিটল। এই পেসার ১০ ওভারে ৬১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মার্ক অ্যাডিয়ের ও গ্রাহাম হিউম। আর একটি করে শিকার ক্যাম্ফাস ও জর্জ ডকরেলের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৪৬/৯ (মুশফিক ৬১, শান্ত ৪৪, হৃদয় ২৭, মিরাজ ২৭, সাকিব ২০, শরিফুল ১৬, তামিম ১৪, তাইজুল ১৪; লিটল ৩/৬১, হিউম ২/৩২, অ্যাডিয়ের ২/৪৪)।

Print Friendly

Related Posts