বাংলাদেশে পঞ্চম বারের মতো ৪দিন ব্যাপি থাইরয়েড মেলা

জ.ই বুলবুল : দি থাইরয়েড সেন্টার লিঃ বাংলাদেশে পঞ্চম বারের মত বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষ্যে ৪ দিন ব্যাপি থাইরয়েড মেলা-২৩ উদযাপন করছে।

এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘থাইরয়েড গ্রন্থির রোগ বিস্তারে বংশগতির ভূমিকা’। মেলায় থাইরয়েড রোগীদের কমমূল্যে সুচিকিৎসা এবং যাদের থাইরয়েড হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের স্বল্প মূল্যে ও ১ বছরের নিচে শিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

মেলা উপলক্ষে ২৪ মে সংবাদ সম্মেলন ও রোগীদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার মেডিসিন ও থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, নিনমাস প্রফেসর ডাঃ এ. কে. এম ফজলুল বারী।

চারদিন ব্যাপি উক্ত থাইরয়েড মেলায় প্রায় ১০০০ রোগীর বিনামূল্যে ও কম মূল্যে সেবার ব্যবস্থা করা হবে।

উক্ত মেলার উদ্দেশ্য:

থাইরয়েড রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
থাইরয়েড রোগের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো।
থাইরয়েড গ্রন্থির রোগ বিস্তারে বংশগতির ভূমিকা।
মা ও শিশুর আয়োডিনের অভাব পূরণে সচেতনতা তৈরি করা।

প্রখ্যাত থাইরয়েড চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ. কে. এম ফজলুল বারী জানান যে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০% মানুষ থাইরয়েড গ্রন্থির নানা রোগে ভুগছে। প্রতি ৫ জন রোগীর ৩ জনই মহিলা। প্রতি ২৩০০ শিশুর মধ্যে ১ জন জন্মগত থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে। এ সকল আক্রান্ত ব্যক্তির ৬০ শতাংশই চিকিৎসা সেবার আওতায় নেই।

এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, থাইরয়েড রোগ বিস্তারে বংশগতির প্রভাব রয়েছে, বিশেষ করে দাদী,নানী বা মা এদের থাইরয়েডে সমস্যা থাকলে শিশুরও থাইরয়েড সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই পেক্ষাপটে ২০০৫ সালে দি থাইরয়েড সেন্টার দিন এর যাত্রা শুরু হয় এবং দি থাইরয়েড সেন্টার বিগত দেড়যুগেরও বেশি সময় ধরে থাইরয়েড রোগীদেরকে অল্প মূল্যে চিকিৎসা প্রদান ও সাধারণ মানুষের মধ্যে থাইরয়েড রোগ সম্পর্কে জন সচেতনতা তৈরি লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

এছাড়াও দি থাইরয়েড সেন্টার লিঃ এর প্রায় ২০,০০০ হাজার নিয়মিত সদস্য আছে। জনসচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যে দি থাইরয়েড সেন্টার লিমিটেড ও বিটমির ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর নিয়মিতভাবে বিশ্ব হাইরয়েড দিবসে থাইরয়েড মেলার আয়োজন করে যাচ্ছে।

ডা. এ. কে. এম ফজলুল বারী বাংলাদেশে প্রথমবারের মত থাইরয়েড চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতি “রেডিওফ্রিকোয়েন্সি” ও “মাইক্রোওয়েভ” এর মাধ্যমে। টিউমার অপসারণ করেন। বিনা অপসারণে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি, মাইক্রোওয়েভ ও লেজার ব্যবহারের মাধ্যমে, কোন কাটা ছাড়া শুধু সুইয়ের মাধ্যমে টিউমার অপসারণ করা যায়।

মেলায় ২৫% কম মূল্যে থাইরয়েড টিউমার RF / লেজারের মাধ্যেমে অ্যাবলেশন করা হবে। তাতে রোগীকে অজ্ঞান করার প্রয়োজন পড়ে না, কিংবা রোগীকে হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন পড়ে না এবং এই পদ্ধতির কোন বড় ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই, খরচও কম হবে । টিউমার অ্যাবলেশনের পদ্ধতি দেশের মানুষের থাইরয়েড সমস্যা ও লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসায় অবদান রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

Print Friendly

Related Posts