বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর ভিড় বাড়ছে। গত বছর ২৩ মে পর্যন্ত ২৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও চলতি বছর একই সময়ে তা দেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে গত বছর ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হলেও এ বছর ইতোমধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন। এ অবস্থায় সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের ২৬ মে পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক হাজার ৬২৪ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে এক হাজার ৪৬ জন এবং ঢাকার বাইরের ৫৭৮ জন। এরমধ্যে চলতি মাসের ২৬ দিনে ৬৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা গত পাঁচ বছরের মে মাসে সর্বোচ্চ।
ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার বাসিন্দারা। দেশের মোট শনাক্তের ৬২ শতাংশই এ সিটিতে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তরে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ঢাকার বাইরে ২১ দশমিক ৯ শতাংশ।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার। এরপরই রয়েছে কেরানীগঞ্জ, কাজলা, উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মুগদা ও জুরাইন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, চলতি বছরে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেজন্য আগাম সতর্কতা এবং প্রস্তুতির প্রয়োজন।
কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। বিশেষ করে, এ বছর ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। বিশেষ করে অপরিকল্পিত নগরায়ন, পানি প্রবাহের সিস্টেম এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। এ বছর এডিস মশার ঘনত্ব বেশি দেখা যাচ্ছে। মের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ায় জ্যামিতিক হারে রোগী বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণহীন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশা নিধন কর্মসূচি সারা বছর অব্যাহত রাখতে হবে। জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, নির্মাণাধীন প্রায় শতভাগ ভবনে মশার লার্ভা পাওয়া যায়। সেগুলো যথাযথ তদারকি প্রয়োজন। নিজেরা এডিসের প্রজননস্থল নির্মূল না করতে পারলে, সিটি করপোরেশনকে জানাতে হবে।