জ. ই বুলবুল : গাইনি চিকিৎসকদের চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোন জটিলটায় বিনা বিচারে গ্রেফতার বন্ধ ও গ্রেফতারকৃত ডাক্তারদের জামিনের দাবিতে ওজিএসবি ও বাংলাদেশের সর্বস্তরের চিকিৎসকবৃন্দের উদ্যোগে এ ধরনের চিকিৎসক নিগ্রহের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ বিশাল মানববন্ধন এর আয়োজন করা হয়।
পরবর্তীতে প্রতিবাদ লিপি প্রদান করে তারা জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দক্ষ ও পরিকল্পিত পরিচালনায় স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন ও অর্জন দেশকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। বিগত কোভিড মহামারীর সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিকনির্দেশনায় ডাক্তারেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন।এসডিজি টার্গেট পূরণে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের ভূমিকা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ডাক্তাররা আন্তরিকতার সাথে নির্দ্বিধায় চিকিৎসা দিতে আজ ভয় পাচ্ছেন, ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়।কেননা বর্তমানে চিকিৎসা দিতে গিয়ে রোগীর মৃত্যু বা জটিলতা সৃষ্টি হলে কোনোরূপ তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যতিরেকে সরাসরি ডাক্তারকে জেল হাজতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই আতংক ও উদ্বেগজনক কর্মকান্ডের সর্বশেষ শিকার ডা: মিলি, ডাঃ মুনা ও ডাঃ শাহজাদী।আন্দোলনকারী ডাক্তাররা বলেন, কোনো মৃত্যুই কখনো কোনো ডাক্তারের কাম্য নয়। রোগীর সুস্থতার জন্যই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকে সকল ডাক্তারের। কিন্তু জটিলতা বা মৃত্যুকাল সময় এড়ানো যায়না, অনিবার্য হয়ে দেখা দেয়। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে যদি ডাক্তারকে শারীরিক লাঞ্ছনা, গ্রেফতার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিগ্রহের শিকার হতে হয়, তবে তা সামগ্রিক চিকিৎসার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে বাধ্য। যা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্হার উপর সূদুরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। আমাদের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাঁধাগ্রস্ত হবে।চিকিৎসকদের বিনা বিচারে গ্রেফতার, জামিন না হওয়া ডাক্তারদের জন্য অশনি সংকেত।ডা. মুনা, ডা. শাহজাদীর গ্রেফতার ও ডা. মাকসুদা মিলি’র জামিন না মঞ্জুর হওয়া কিছু দুষ্ট প্রকৃতির মানুষকে উৎসাহিত করবে বিনা দোষে চিকিৎসকদের হেনস্তা করতে।
অপরাধীর শাস্তি হোক, তা আমরা সকলে চাই, কিন্তু অপরাধ প্রমাণের আগেই অপরাধী সাব্যস্ত করে জেল হাজতের অসম্মান থেকে চিকিৎসকদের রক্ষা করা খুবই জরুরি । ডা. মুনা ও ডা. শাহজাদীকে তাই সসম্মানে জামিন দেয়া হোক,ও ডা. মাকসুদা মিলিকে আগাম জামিন ও মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করা হোক। প্রধানমন্ত্রীর সূযোগ্য নেতৃত্ব ও অভিভাবকত্ব আমাদের চিকিৎসকদের এই রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা মনে করি, তাঁর সঠিক দিকনির্দেশনায় চিকিৎসকদের নিরাপত্তার স্বার্থে দীর্ঘমেয়াদী সঠিক পদক্ষেপ এর মুখ আমরা দেখতে পাবো। আমরা চাই, চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ চিকিৎসা পরিবেশ তৈরি হোক। তাহলেই মাতৃমৃত্যু কমিয়ে আমরা ২০৩০ এ এসডিজি গোল অর্জন করার সক্ষমতায় পৌছাতে পারব।