রাজকীয়ভাবে মেসিকে উপস্থাপন করে বিশ্বকে চমকে দিলো আমেরিকা। এমন চোখ ধাঁধানো উপস্থাপন সত্যি নজিরবিহীন। লিওনেল মেসি গেল ১২ জুলাই মায়ামিতে পৌঁছান। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় তাকে রাজকীয় আবহে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় তার বার্সা সতীর্থ সার্জিও বুসকেটসকেও উপস্থাপন করা হয়।
মেসির উপস্থাপন উপলক্ষ্যে দারুণভাবে সাজানো হয় ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামটি। সেখানে গ্যালারিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। হঠাৎ স্টেডিয়ামের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। কেবল আবছা গোলাপী আলোয় ভরে ওঠে স্টেডিয়াম। সাউন্ড সিস্টেমে ঘোষণা আসে, ‘স্বাগতম, মায়ামির নতুন নাম্বার টেন, আমেরিকার নতুন নাম্বার টেন, বিশ্বের সেরা নাম্বার টেন— লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।’
এ সময় পেছনে জিরো লেখা সাদা একটি টি-শার্ট পরে হাসিমাখা মুখ নিয়ে পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসেন মেসি। এরপর দুই পাশে উপস্থিত একাংশের সঙ্গে হাত মেলাতে মেলাতে আস্তে আস্তে মঞ্চে প্রবেশ করতে শুরু করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। স্টেডিয়াম জুড়ে তখন করতালি, উল্লাস আর উচ্ছ্বাসের শব্দ।
মঞ্চে আসতেই মেসিকে আলিঙ্গন করেন ডেভিড বেকহ্যাম, এ সময় হাতে গোলাপী রঙের জার্সি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মায়ামির মালিক হোসে আ. মাস। তার সঙ্গে ছিলেন ক্লাবের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। তাদের কেউ মেসিকে আলিঙ্গন করেন। কেউবা হাত মেলান।
আলো-ছায়ার স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার হাজার দর্শকের মোবাইল ক্যামেরার ফ্ল্যাশ লাইট জ্বলে ওঠে বারংবার। মেসির হাতে নাম্বার টেন জার্সি তুলে দিয়ে করা হয় ফটোসেশন। এ সময় আতশবাজির ঝলকানিতে চারিপাশ আলোকোজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
নিজ বক্তব্যে মেসি সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। শুভ সন্ধ্যা।’
‘আমি এখানে আসার পর থেকে যেভাবে আমাকে আপনারা স্বাগত জানিয়েছেন, আমার প্রতি যে পরিমাণ আবেগ ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন সেটার জন্য মায়ামির সর্বস্তরের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি আপনার সঙ্গে থাকতে পেরে খুব উচ্ছ্বসিত। আমি এটার জন্য ধন্যবাদ দিতে চাই হোসে মাস, জর্জ এবং ডেভিডকে, বিশেষ করে আমার জন্য সবকিছু সহজ করে দেওয়ার জন্য। আমি এখানে নিজ বাড়ির মতো অনুভব করছি।’
‘আমি প্রশিক্ষণ শুরু করতে এবং মাঠে নামতে মুখিয়ে আছি। আমি এই ক্লাবটিকে বড় করতে জিততে চাই অনেক কিছু। আমি আশা করি পুরো সময়টা জুড়ে আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন। ব্যক্তিগতভাবে, আমি বিশ্বাস করি যে আমার সতীর্থরা এই প্রকল্পটি তৈরি করার জন্য সবকিছু দিতে যাচ্ছে এবং আমি এই শহরটি বেছে নিয়ে, এই প্রকল্পটি বেছে নিতে পেরে খুব খুশি এবং আমার কোন সন্দেহ নেই যে আমরা একটি দুর্দান্ত সময় কাটাতে যাচ্ছি এবং আমরা দারুণ দারুণ কিছু অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি।’
শনিবার ক্লাবটি জানিয়েছে, ২০২৫ সাল পর্যন্ত মায়ামির সাথে চুক্তি করেছেন ৩৬ বছর বয়সী মেসি। বাৎসরিক তিনি ৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন ডলার পাবেন মেজর লিগ সকারের ক্লাবটির কাছ থেকে।
আগামী শুক্রবার মায়ামির হয়ে মাঠে নামবেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা।