বদরুজ্জামান জামান, প্যারিস থেকে: গত ৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যায় প্যারিসের একটি হলে সাহিত্যের ছোটো কাগজ “স্রোত” আয়োজিত ‘স্রোত’ অষ্টম সংখ্যা প্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হলো পাঠোন্মোচন ও আড্ডা।
সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার- শিরোনামে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত লেখক, বিজ্ঞানী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিবিদ ড. নুরুন নবী।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসনাত জাহানের সভাপতিত্বে এবং “স্রোত” সম্পাদক কবি বদরুজ্জামান জামানের সঞ্চালনায় সংগীতশিল্পী ইসরাত ফ্লোরা ও রামিসা বাতুলের সাথে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
প্রকাশিত সংখ্যার উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- ছড়াকার কবি ও লেখক লোকমান আহমেদ আপন।
প্রধান অতিথি ড. নুরুন নবী স্রোত অষ্টম সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন। এরপর পাঠোন্মোচন সূচনা করেন- বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী মুনির কাদের।
স্রোত থেকে লেখা পাঠে অংশ নেন- খালেদুর রহমান সাগর, কবি মেরি হাওলাদার, মোহাম্মদ আহমদ সেলিম, প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ গোলাম মুরশেদ এবং পুঁথি পাঠ করেন কাব্য কামরুল।
আলোচনায় অংশ নেন- সাংবাদিক অধ্যাপক অপু আলম, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রকাশ রায়, সাংবাদিক দেবেশ বড়ুয়া, প্যারিস মেরির ইয়ুথ কাউন্সিলর এন কে নয়ন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির পরিচিতি উপস্থাপন করেন কবি বদরুজ্জামান জামান। তারপর প্রধান অতিথিকে স্রোতের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট তুলে দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসনাত জাহান ।
প্রধান অতিথি ড. নুরুন নবী তার আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অভিজ্ঞতা ও যুদ্ধের কাহিনী সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন. বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুধু পরিবর্তন করা হয়নি এটাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।তখন অনেকে বলা শুরু করলো যে ২৬ শে মার্চের পর হঠাৎ যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল কিন্তু তার আগে যে মুক্তির সংগ্রামের একটা বিরাট অধ্যায় ছিল, সেখানে আমি নিজে অংশগ্রহণ করেছি ছাত্র কর্মী হিসাবে, সেটার কথা অনেকে জানে না । আমি সারা জীবন বিজ্ঞানী হিসেবে গবেষণা করেছি , আমার অন্য কোন ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু আমি ভাবলাম মুক্তির সংগ্রামে আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা দরকার। এই আমার লেখালেখি শুরু। এই পর্যায়ে আমার ২২ টি বই বাংলা এবং ইংরেজিতে প্রকাশ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন- সাহিত্য একটি জাতির ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি। এই সাহিত্যে যদি জাতির মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন না থাকে তাহলে এই জাতির সাহিত্য অপূর্ণ থেকে যাবে ।
আলোচনা শেষ প্রান্তে বাংলা সাহিত্য মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়ে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ড. জিনাত নবী, সাংস্কৃতিককর্মী আব্দুল হামিদ, চিত্রশিল্পী তোফায়েল আহমদ জয়নুল, সংগঠক রাকিবুল ইসলাম, বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার মাহমুদ আলী, প্রাসেলা আলী, আহমেদ মওদুদ প্রমুখ।
পরিশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি হাসনাত জাহান সবাই কে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মোহাম্মদ আহমেদ সেলিম এবং মাহমুদ আলী।