জ ই বুলবুল : ‘কখনও খুব আগে নয়, কখনও খুব পরে নয়’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বিশ্ব আলঝেইমার দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে এই দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে সচেতনতামূলক র্যালি ও বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে বিশ্ব আলঝেইমার দিবস পালন করা হয়।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে এক বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে বিশ্ব আলঝেইমার দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর পর দুপুর ১২টায় সচেতনতামূলক প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে একটি বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে নিউরোলজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মালিহা হাকিম সচিত্র প্রতিবেদন ও গবেষণাকর্ম তুলে ধরেন। সেখানে তিনি আলঝেইমার দিবস পালনের গুরুত্ব ও রোগটি সম্পর্কে সচেতনতামূলক বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। ডা. মালিহা হাকিম বলেন, ‘আলঝেইমার একটি স্নায়ুক্ষয়জনিত রোগ। সাধারণত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তবে কম বয়সেও অনেকে আক্রান্ত হন। এই রোগের প্রধান লক্ষণ হিসেবে দেখা যায়, আক্রান্ত ব্যক্তির স্মৃতিশক্তি খুব দুর্বল হয়ে যায়। মস্তিষ্কের বিভিন্ন কার্যক্ষমতাও লোপ পায়।’
বিশ্ব আলঝেইমার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নেন অধ্যাপক ডা. মালিহা হাকিম।
আলঝেইমারে আক্রান্ত রোগীদের কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে ডা. মালিহা বলেন, ‘অনেকে ফ্রিজের মধ্যে চশমা রেখে সারা বাড়ি খুঁজে বেড়ান। আবার কেউ সকালের নাশতা করে কিংবা খাবার খেয়ে মনে করতে পারেন না তিনি খেয়েছেন কি না। অনেকে বাজারে গিয়ে ভুলে যান তিনি কেন বাজারে গিয়েছেন কিংবা পরিচিত জায়গায় হারিয়ে যান। অনেক সময়ে হাঁটাচলা করা ব্যক্তিও জামাকাপড়ে মলমূত্র ত্যাগ করে ফেলেন। সে ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সাধারণত আলঝেইমার বংশগত হয়।’
অধ্যাপক ডা. মালিহা হাকিম আরও বলেন, ‘আলঝেইমার আক্রান্ত ব্যক্তি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যান। এটি মস্তিষ্কের একটি অনিরাময়যোগ্য রোগ। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে ৩-৮ বছরের মধ্যে এই রোগের অবনতির ধারা স্থির রাখা যায়। রোগটি নিয়ে আমরা গবেষণা করছি। সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার মাধ্যমে এই রোগের অনেকটাই প্রতিকার সম্ভব।’
নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ সেলিম শাহীর সঞ্চালনায় আয়োজিত এই সেমিনারে সভাপতি ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, তিনি বলেন, এটি মস্তিষ্কের একটি অনিরাময়যোগ্য রোগ তবে সচেতন থেকে ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো থাকা যায় তাই শুরুতেই সবার মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে । সহ-সভাপতি ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলম।
সেমিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন এসএনবির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ কোরায়েশি, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুল মুকিত মজুমদার (বাবু), অভিনেতা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সিদ্দিকী (নায়ক রিয়াজ)। অন্যদিকে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নেন অধ্যাপক ডা. নারায়ন সাহা, অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. শরিফ উদ্দিন খান, অধ্যাপক ডা. কাজী মহিবুর রহমান, অধ্যাপক ডা. এম. এস. জহিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. রাজিব নয়ন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. আফজাল মোমিন এবং ডা. এম এম জালাল উদ্দিন।
সেমিনারে সহযোগিতার জন্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মার্কেটিং বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে ধন্যবাদ জানানো হয় ।