দুই চিনের দুই পতাকা

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক চিন— নামটা শুনলেই যে ম্যাপটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে, সেটা ভারতের উত্তরে ও উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি বিশাল দেশের। দেশটার এক দিকে কাজখস্তান, কিরঘিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান। উত্তরে রাশিয়া আর মঙ্গোলিয়া। পূর্ব আর দক্ষিণ দিকের বেশির ভাগ অংশেই সমুদ্র। দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, ভিয়েতনাম।

এই চিন সম্পর্কে ভারতীয়রা অতিমাত্রায় সচেতন। কারণ এশিয়ার দুই সবচেয়ে বড় শক্তি হওয়ায় এই চিন আর ভারতের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে।

এই চিন দেশকে গোটা বিশ্ব চিনলেও, অন্য চিন দেশটার কথা কিন্তু অধিকাংশই জানেন না। চিন নামে দ্বিতীয় দেশটাও এশিয়াতেই রয়েছে। তার অবস্থান চিনের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সমুদ্রের মাঝে একটি দ্বীপপুঞ্জ হিসেবে। এর পূর্বে এবং উত্তর-পূর্বে রয়েছে জাপান। দক্ষিণে ফিলিপিন্স।

এই দেশটিকে আসলে সকলে তাইওয়ান নামে চেনেন। কিন্তু দেশটির সরকারি নাম রিপাবলিক অব চায়না বা প্রজাতন্ত্রী চিন। আর যে চিন দেশকে আমরা সবাই চিন নামে চিনি, সেই দেশের সরকারি নাম পিপলস রিপাবলিক অব চায়না বা গণপ্রজাতন্ত্রী চিন।

দুই দেশের এমন প্রায় একই নাম হওয়ার কারণটা ঐতিহাসিক। চিনে কমিউনিস্ট শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ার ঠিক আগে সে দেশের শাসন ক্ষমতায় ছিল মার্শাল চিয়াং কাইশেকের সরকার। তখন চিনের সরকারি নাম ছিল রিপাবলিক অব চায়না। তাইওয়ান সে সময় চিনেরই অংশ ছিল।

কমিউনিস্টদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই শুরু হওয়ার পর মাও জে দং-এর বাহিনীর কাছে ক্রমশ পিছু হঠতে থাকে সরকার। মার্শাল চিয়াং কাইশেক ও তাঁর অনুগামীরা চিনের মূল ভূখণ্ড ছেড়ে পালিয়ে যান। তাইওয়ানে আশ্রয় নেন। তাইওয়ান এবং আশপাশের কয়েকটি দ্বীপ ছাড়া চিনের বাকি সব অংশ কমিউনিস্টদের দখলে চলে যায়। সেই কমিউনিস্ট সরকার চিনের নাম রাখে গণপ্রজাতন্ত্রী চিন। আর কাইশেকের শাসনে তাইওয়ান-সহ আশপাশের দ্বীপগুলির নাম আগের মতোই থাকে প্রজাতন্ত্রী চিন। তাই সেই ১৯৪৯ সাল থেকেই পৃথিবীতে চিন নামে দু’টি দেশ।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts