পূন্যস্নানে শেষ হলো রাস উৎসব

গঙ্গাস্নান বা পূন্য স্নানের মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শেষ হয়েছে রাস উৎসব।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে জাগতিক সকল পাপ মোচনের আশায় সৈকতের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে এ গঙ্গাস্নান সম্পন্ন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কুয়াকাটায় রাসলীলা শেষ হলেও কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমে এ উৎসব চলবে আরও ৫ দিন।

সরেজমিনে ঘুরে দেয়া যায়, রাতভর কুয়াকাটার শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে চলে পূজা অর্চনা। ভোরে স্নান সম্পন্ন করেন সনাতনীরা। এর আগে সৈকতে মোমবাতি, আগরবাতি, বেল পাতা, ফুল, ধান, দুর্বা, হরিতকী, ডাব, কলা, তেল ও সিঁঁদুর সমুদ্রে জলে অর্পণ করেন সনাতনী নারীরা। এসময় উলুধ্বনি ও মন্ত্রপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত। এছাড়া মাথা ন্যাড়াসহ প্রায়শ্চিত্ত ও পিন্ডদান করেন অনেক মানতকারীরা। পরে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা দর্শন করেন তারা।

মানবতা রক্ষায় দ্বাপর যুগে কংস রাজাকে বস করে পূর্নিমা তিথিতে হয় রাধাকৃষ্ণের পরম প্রেম। সেই থেকেই মূলত রাস উৎসবের প্রচলন। তবে কুয়াকাটায় প্রায় শত বছর ধরে এই উৎসব পালন হয়ে আসছে।

খুলনা থেকে আসা পূন্যার্থী গৌতম মন্ডল বলেন, এবারই প্রথম কুয়াকাটায় রাস উদযাপন করতে এসেছি। রাতভর পূজার্চনা ও সংগীতানুষ্ঠান হয়েছে। নকুল কুমার মন কাড়া বেশ কয়েকটি ধর্মীয় গান গেয়েছে। আমাদের মানত ছিলো। মনোবাসনা পূন্যের আসায় সকালে গঙ্গাস্নান দিয়েছি। আমাদের এই পূজার্চনার সময়টা অনেক ভালো লেগেছে। পিরোজপুর থেকে আসা আড়তি রানী জানান, আমরা পরিবারের সবাই গতকাল সকালেই রাস উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে এসেছি। জগতের সকণ জাগতিক পাপ মোচনের আসায় আমরা পূন্যস্নান করেছি। এখানে অনেক লোক এসেছি। সৈকতে পা ফেলার জায়গা নেই।

কুয়াকাটার শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক নীহান রঞ্জন মন্ডল বলেন, সকলের সহযোগিতায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আমাদের রাস উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই।

কলাপাড়া মদনমোহন সেবাশ্রমের যুব কমিটির সভাপতি বিকাশ চন্দ্র জানান, কুয়াকাটায় স্নান শেষ করে পূন্যার্থীরা এই মন্দিরে আসবেন। আমাদের এখানে ৫ দিন ব্যাপী উৎসব চলবে। রাস পূজা উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গনে মেলা বসানো হয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts