জামাল বাদশা : সকল প্রস্তুতি শেষ হলেও এখনো চালু হয়নি বুড়িমারী এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনটি। উদ্বোধনের আগে লালমনিরহাট স্টেশনে আনা হয়েছিলো ট্রেনটির কোচ। করা হয়েছিলো ট্রায়াল রান।
লালমনিরহাট জেলাবাসীদের কাঙ্খিত এই ট্রেনটি চালুর জন্য একাধিকবার তারিখ নির্ধারণ করা হলেও উদ্বোধন হয়নি এখনো। কেনো উদ্বোধন হয়নি তার কারণ জানায়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফলে বুড়িমাড়ী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
লালমনিরহাট রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত বছর ৩০ নভেম্বর ছিলো ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ ট্রেন উদ্বোধনের তারিখ। দিনটি পরিবর্তন করে নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৬ ডিসেম্বর। পরে ওই দিনটি পরিবর্তন করে নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১৬ ডিসেম্বর। এ তারিখেও উদ্বোধন করা হয়নি ট্রেনটি। পুণরায় উদ্বোধনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু এদিনেও উদ্বোধন করা হয়নি ট্রেনটি।
রেলওয়ে কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজন জানান, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বহুল আলোচিত দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ও তিনবিঘা কড়িডোর পরদির্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় তিনি বুড়িমারী থেকে সরাসরি ঢাকায় চলাচলের জন্য একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৮ সালের ১৬ জুন সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক আসেন লালমনিরহাট স্টেশনে। ওই সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন পরিদর্শনে আসেন লালমনিরহাট স্টেশন। সে সময় তিনি বলেন, বুড়িমারী-ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ট্রেন দ্রুত চালু করা হবে। কারণ আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ রেলপোষ্য সোসাইটির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বুড়িমারী-ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে অর্ধশতাধিক মানববন্ধন করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে স্মারকলিপি। বিগত তিনমাসে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন চারবার পিছিয়েছে। ট্রেনটি কবে উদ্বোধন হবে তা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও বিস্তারিত বলছেন না। বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন নিয়ে লালমনিরহাটবাসির সাথে লুকোচুরি খেলা হচ্ছে। আমাদেরকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে।
পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বুড়িমারী স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি রুহুল আমিন বাবুল বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ও ভুটানে প্রতিদিন সহস্রাধিক পাসপোর্টযাত্রী ও ব্যবসায়ীর যাতায়াত। বুড়িমারী থেকে ঢাকা সরাসরি ট্রেন সার্ভিস না থাকায় মানুষজনকে ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন আমাদের কাছে একটি আকাংখার ট্রেন। এ ট্রেনকে নিয়ে আমরা উন্নয়নের স্বপ্ন দেখি। কিন্তু আজো এ ট্রেনটি উদ্বোধন হয়নি।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় কমার্শিয়াল ম্যানেজার (ডিসিএম) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন এ বিষয়ে বলেন, রেলওয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধনের তারিখ পিছিয়েছে। উদ্বোধনের জন্য পুনরায় তারিখ নির্ধারণ করতে প্রস্তুতি চলছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই এ ট্রেনটি চালু করা হবে। ট্রেনটির ট্রায়াল রানও শেষ করা হয়েছে। বুড়িমারী-ঢাকা রুট হবে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম রেলওয়ে রুট। আমরা আশা করছি এবার উদ্বোধনের তারিখ চুড়ান্ত হলে তা আর পরিবর্তন হবে না।