কন্ঠশিল্পী পথিক সবুজের জন্মদিন পালিত

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ তরুণ কন্ঠশিল্পী পথিক সবুজ। যার দু’চোখে শুধুই সুরে সুরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। ১৫ অক্টোবর শাহবাগস্থ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর’র কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে, আরশীনগর ফাউন্ডেশন’র আয়োজনে জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হলো তার জন্মোৎসব।

সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার শিল্প শহর ছাতকের ছেলে পথিক ১৯৭৯ সালের এইদিনে জন্ম গ্রহন করেন। জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল এটিএন বাংলার প্রধান উপদেষ্টা জিএম শামসুল হুদা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত থেকে কেক কেটে জন্মোৎসব’র সুচনা করেন।

দৈনিক মুক্ততথ্য’র সম্পাদক কবি শাহীন রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন দেশের খ্যাতিমান ফিজিও থেরাপিষ্ট সাদিয়া আরবী রিম্মি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশন’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব কন্ঠশিল্পী খন্দকার মোকাররম আলী।

পথিক সবুজ মাত্র আট বছর বয়সেই বাবার কাছে সংগীতে হাতেখড়ি নেন। বাবার ইচ্ছাতেই ১৯৮৬ সালে ছাতকের ঐতিহ্যবাহী কনকচাঁপা খেলাঘর আসর এ ভর্তি হয়ে একটানা পাঁচ বছর সেখানে সংগীতে তালিম নেন। ১৯৯১ সালের শেষের দিকে ছাতকের প্রখ্যাত সংগীত গুরু ওস্তাদ সুবল চন্দ্র দেব এর কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেয়া শুরু করেন পথিক সবুজ।

পরবর্তীতে সিলেট সংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত পন্ডিত রাম কানাই দাসের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেয়ার সুযোগ আসে পথিকের জীবনে। সংগীতকে ঘিরে যে মানুষটির পথচলা তিনি কখনো থেমে থাকার পাত্র নন। প্রায় দু’বছর পন্ডিতজীর কাছে তালিম নিয়ে ১৯৯৭ সালে ঢাকায় এসে ঐতিহ্যবাহী সংগীত বিদ্যাপীঠ বুলবুল ললীতকলা একাডেমী (বাফা) তে সার্টিফিকিট কোর্সে ভর্তি হন। পাশাপাশি ওস্তাদ ওমর ফারুক এর কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীত ও আধুনিক গানে প্রয়াত কন্ঠশিল্পী বশীর আহমেদ এর কাছে শিক্ষা গ্রহন করেন।

২০০২ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘নিঠুর পিরিতি’ বাজারে আনে তরঙ্গ ইলেক্ট্র সেন্টার। গুরুজীর আদর্শ নিয়ে এগিয়ে চলা পথিকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আর বন্ধুদের সহযোগিতায় ২০০৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন দেশীয় শুদ্ধ সংস্কৃতির ধারক ও বাহক প্রতিষ্ঠান ‘আরশীনগর ফাউন্ডেশন’। সংগীতের প্রতি নিজের দ্বায়বদ্ধতা থেকেই এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিগত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে নতুন নতুন শিল্পী তৈরীতে কাজ করে যাচ্ছেন পথিক।

তিন বছর বিরতির পর ২০০৬ সালে তরঙ্গ থেকে বাজারে আসে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘এক জনমে সুখ দিলিনা’ সর্বশেষ ২০০৮ সালে মিউজিক ভিশন থেকে তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘মন পিঞ্জিরার পাখী’ বাজারে আসার পর আরও ২টি অ্যালবামের কাজ সম্পন্ন হলেও বাজার পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে অ্যালবাম রিলিজ করা হয়নি।

সংগীতের পাশাপাশি গান রচনায়ও পিছিয়ে নেই এই কন্ঠযোদ্ধা। নিয়মিত গান লিখছেন আবার নিজেই সুরারূপ করছেন গানে। তার কথা ও সুরে ইমপ্রেস অডিও ভিশন থেকে ২০১২ সালে সময়ের আলোচিত কন্ঠশিল্পী শাওন চেীধুরীর গাওয়া দশটি গান নিয়ে প্রকাশিত হয় অ্যালবাম ‘ভালোবাসা ভালো থেকো’ অ্যালবামের সবক’টি গানের কথা ও সুর করেছেন পথিক সবুজ। তার কথা, সুর ও সংগীতে প্রকাশিত অ্যালবাম এর মধ্যে রয়েছে- প্রবাসী কন্ঠশিল্পী নাবিলা’র ‘মন ছুঁয়ে যাও, ইরফান এর ‘সরল প্রাণে, রাইমা’র ‘মন বুঝনা, ইসতিয়াক বাপ্পীর ‘কি ক্ষতি করেছি, সায়লা নাজনীন এর ‘অভিমান, প্রিন্স বিপ্লব এর ‘নীল নয়না, সুইটি’র ‘স্বপ্ন কুড়াই, ববি’র ‘আঁড়ি, সজল এর ‘এক সাগর দুঃখ, চপল এর ‘শত্রু তুমি, আইরিন এর ‘নকশী বুনা প্রেম, রুনা’র ‘খুঁজি শুধু তোমায়, পুনম এর ‘দূরে থেকো না, নায়লা’র ‘তিন সত্যি, পিংকি’র ‘রসিয়া বন্ধু, সোহেল এর ‘একবার বলে যাও, চৈতী’র ‘দুই দুয়ারী স্বপ্ন’ অন্যতম।

তার জন্মোৎসবকে ঘিরে আয়োজিত সংগীতানুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে শ্রেুাতাদের বিমোহিত করে রাখেন, শাফিনা শারমিন, রেজা তাবাস্সুম প্রমা, মির্জা গালিব, শায়লা শারমিন ইংকি, মৌসুমী সীমা, পিংকি প্রমূখ।

 

Print Friendly

Related Posts