বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ কখন?

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’ ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় ১০ মে বিকাল ৪টা ১২ মিনিট থেকে ৬টা ২২ মিনিটের মধ্যে (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ২টা ১২ মিনিট থেকে ৪টা ২২ মিনিট) বঙ্গবন্ধু-১ এর উৎক্ষেপণের সময় ঠিক করেছে ।

বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দেখতে আগ্রহীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার। কেনেডি স্পেস সেন্টারের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রথমবারের মতো ফ্যালকন-৯ রকেটের ব্লক ৫ সংস্করণ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিয়ে জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটের পথে ছুটবে।

সারা দিনের জন্য টিকেট কেটে আগ্রহীরা লঞ্চ প্যাড থেকে প্রায় ৩ দশমিক ৯ মাইল দূরে অ্যাপোলো/স্যাটার্ন ভি সেন্টার এবং প্রায় সাড়ে ৭ মাইল দূরে কেনেডি স্পেস সেন্টারের মূল ভিজিটর কমপ্লেক্স থেকে এই উৎক্ষেপণ দেখার সুযোগ পাবেন। অ্যাপোলো/স্যাটার্ন ভি সেন্টারে যাওয়া যাবে শুধু কেনেডি স্পেস সেন্টারের বাসে চড়ে এবং সেটা ধারণক্ষমতা পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ উপলক্ষে সোমবার ফ্লোরিডা গেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম (সাবেক টেলিকম প্রতিমন্ত্রী), তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।

ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার আগে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ১০ তারিখ ধরে সব প্রস্তুতি নেওয়া হলেও এসব ক্ষেত্রে আবহাওয়া এবং কারিগরি বিষয়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। বহু ঘটনা আছে, যেখানে কাউন্ট ডাউনের একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়েও উৎক্ষেপণ স্থগিত করতে হয়েছে।

স্পেসএক্স এবারই প্রথম উপগ্রহ উৎক্ষেপণে তাদের ফ্যালকন-৯ রকেটের ব্লক ৫ সংস্করণ ব্যবহার করতে যাচ্ছে। গত ৪ মে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে নতুন এই রকেটের স্ট্যাটিক ফায়ার টেস্ট সম্পন্ন হয়।

তিন হাজার ৫০০ কেজি ওজনের জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ফ্যালকন-৯ কক্ষপথের দিকে ছুটবে কেনেডি স্পেস সেন্টারের ঐতিহাসিক লঞ্চ কমপ্লেক্স ৩৯-এ থেকে। এই লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকেই ১৯৬৯ সালে চন্দ্রাভিযানে রওনা হয়েছিল অ্যাপোলো-১১।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মিত হয়েছে ফ্রান্সের তালিস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিতে। নির্মাণ, পরীক্ষা, পর্যালোচনা ও হস্তান্তর শেষে বিশেষ কার্গো বিমানে করে সেটি কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ সাইটে পাঠানো হয়।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য প্রথমে ১৬ ডিসেম্বর তারিখ ঠিক করা হলেও হারিকেন আরমায় ফ্লোরিডায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। এরপর ৪ মে উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য তারিখ রাখা হয়। কিন্তু এপ্রিলের শেষে এক অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, উৎক্ষেপণ পিছিয়ে গেছে অন্তত ৭ মে পর্যন্ত। আবহওয়া অনুকূলে না থাকায় সেই তারিখ আবার পিছিয়ে এখন ১০ মে সম্ভাব্য তারিখ রাখা হয়েছে।

সরকারের আশা, বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, এ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের সেই অর্থ সাশ্রয় হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে, যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে এবং বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।

Print Friendly

Related Posts