মাহমুদ হাফিজ
কোচবিহারের রাজপ্রাসাদ, মাথাভাঙ্গা ও চেঙরাবান্ধা ভ্রমণের মধ্য দিয়ে আমাদের দু’সপ্তাহের উত্তরবঙ্গ, ডুয়ার্স ও সিকিম ট্রিপ শেষ হয়েছে রবিবার (২১ এপ্রিল)। প্রিয় শহর ঢাকা বসে এই সামরি লিখছি।
ডুয়ার্সের হলং জঙ্গলরিসোর্টে কলকাতার রাইটার্স ওয়ার্ল্ড আয়োজিত দু’দিনের আন্তর্জাতিক লিটারারি মিট রোমাঞ্চকর এই ভ্রমণের উপলক্ষ। ট্রিপে জলদাপাড়া, চিলাপাতা, গরুবাথান, চাপড়ামারিসহ আশপাশের কয়েকটি জঙ্গল ভ্রমণ করি। জঙ্গল সাফারিতে ময়ূর, বানর, ভারতীয় বাইসন, বিরলপ্রজাতির একশৃঙ্গ গন্ডার, নানা প্রজাতির হরিণ, বনমোরগ নানা পোকামাকড় ও জঙ্গলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বহুরকম বৃক্ষ ও লতাগুল্ম দেখি। বনবিহার থেকে চলে যাই পার্বত্যঅঞ্চলে।
দূর্গম পাহাড়ি জনপদ ভ্রমণ শুরু হয় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ছয়হাজার ফুট উচ্চতায় কোলাখাম দিয়ে।পরে লাভা, রিশপ, ক্যালিম্পং, গ্যাংটক ও দার্জিলিংয়ের পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে বেড়াই।
দু’সপ্তাহের ট্রিপে অজস্র পাহাড়ি ঝর্ণা, ডজনের মতো ধর্মগৃহ তথা মসজিদ, মন্দির ও বৌদ্ধমঠ, নানা নামের পাহাড়, পাহাড়ি নদী আর ভিউপয়েন্ট দেখি। চিড়িয়াখানা, একাধিক চা বাগান, নানা দর্শনীয় স্থান ছিল উল্লেখেযোগ্য ভ্রমণ অনুষঙ্গ। খাদ্যবৈচিত্রে ছিল তারকা হোটেলের নানা পদের সঙ্গে স্ট্রিট ফুড। তিব্বতি, পাহাড়ি, বাঙালি, উপজাতীয় ও উপনিবেশ আমলের নানা স্বাদের যোগ ভ্রমণকে করে তুলেছিল বহুমাত্রিক।
এই ভ্রমণযাত্রায় যানবাহন হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে ঢাকা-সৈয়দপুর-বুড়িমারি সীমান্ত- ডুয়ার্স: বিমান রিজাভ প্রাইভেট কার। হলং-কোলাখাম-কালিম্পঙ-গ্যাংটক-দার্জিলিং: প্রাইভেট জীপ ও কার। দার্জিলিং-শিলিগুড়ি-কোচবিহার- তুফানগঞ্জ-মাথাভাঙ্গা-চেংড়াবান্ধা: শেয়ারগাড়ি, বাস, অটো ও টোটো। বুড়মারি সীমান্ত-ঢাকা হুন্দাই বিলাসবহুল বাস।
পুরো উত্তরবঙ্গের নদীবাহিত সমতল, বনবাদাড়, তুষারাচ্ছাদিত পর্বত আর প্রাকৃতিক সব দর্শনীয় স্থানের এই চমৎকার সপ্তাহ দু’টির রোমাঞ্চে আমাদের উস্কে দেয়ার জন্য কবি লেখক সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য ও কবি লেখক শিক্ষক স্বপন ভট্টাচার্যকে সাধুবাদ দিই।