হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত ভোলার চরাঞ্চলের মানুষ

জুবায়ের চৌধুরী পার্থ, ভোলা:  হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে ভোলার চরাঞ্চলের মানুষের জনজীবন। সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকা ঠান্ডার প্রকোপ অসহনীয় রুপ নিচ্ছে ভোর রাতে। ফলে মাঠে কাজ করা কৃষক আর রাতের নদীতে থাকা জেলেরা সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই শীতেও গৃহহীন মানুষ খোলা আকাশের নিচে অথবা নৌকার ভিতরে রাত কাটাচ্ছেন। তাদের প্রধান পেশা নদীতে মাছ ধরা, কৃষি ও দিনমজুর হিসাবে কাজ করা। এদের কাছে শীত গ্রীষ্ম সব ঋতুই যেন এক সমান।

অসহনীয় শীতে সবচেয়ে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া ও নদীর তীরে বসবাস করা মানুষেরা। শীতের প্রভাবের ও ঘন কুয়াশার কারণে স্বাভাবিক ভাবে কোন কার্যক্রম করতে পারছে না তারা। এ ছাড়াও শিশু থেকে বৃদ্ধরা শীতজনিত রোগে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে। প্রচন্ড শীতে রেহাই মিলছে না, জীবিকার তাগিদে মাঠে কাজ করা সাধারন মানুষগুলোর। নদীর তীরে থাকা মানুষদের শীত নিবারণের জন্য নেই পর্যাপ্ত  পোশাক।

কিন্তু জীবিকার তাগিদে ও পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে কৃষকরা ভোর না হতেই চলে যান মাঠে কাজ করতে, কারো গায়ে থাকে পাটের বস্তা, কারও গায়ে ময়লা মোড়ানো ছেরা কম্বল, আবার কারও গায়ে থাকে শুধু একটি শার্ট বা গেন্জি। ফলে তাদের কাছে ভোর হয়ে উঠেছে খুব যন্ত্রনার।

ভোলা মেঘনা নদীর কিনারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল নৌকার ভিতরে একটি মাত্র কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে কয়েকজন জেলে, কেউবা কম্বল শরীরে পেচিয়ে বসে আছে, কেউবা শীতবস্ত্রের অভাবে খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। হতদরিদ্র এসব মানুষগুলোর কাছে শীত মানে, প্রচণ্ড ঠান্ডায় খড়-কুটো জ্বালিয়ে আগুনে হাত পোহানো আর পরবর্তী ভোরের অপেক্ষা। যেন কোনমতে শীতটা পার করতে পারলেই বেঁচে যায় তারা।

অসহায় এই সকল মানুষরা পাচ্ছেনা কোন প্রশাসনিক বা স্বেচ্ছা সেবী সংগঠনের সুবিধা। তাদের মিলছে না শীত নিবারণের জন্য পোশাক বা কোন আর্থিক সাহায্য। ফলে বিভিন্ন স্থান হতে কুড়িয়ে পাওয়া বা কয়েক বছর পূর্বের সংগ্রহকৃত ছেড়া কম্বল দিয়ে কোন ভাবে শীতের প্রকোপ থেকে নিজেকে রক্ষার করার জন্য বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা।

Print Friendly

Related Posts