জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ৭১ বছর পূর্ণ

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ আরব-ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন সময়ে ১৯৪৮ সালের ২৯ মে যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে গঠিত হয় জাতিসংঘ ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন (আন্টসো)।এই হিসাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ৭১ বছর পূর্ণ হলো।

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ। এইদিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব পুরুষ-নারীকে, তাদের কর্তব্যপরায়ণতা ও আত্মত্যাগের ঘটনাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক গুরুত্বের সাথে দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগদান করে সুনামের সাথে আজো দায়িত্ব পালনে অবিচল রয়েছে। বাংলাদেশও আজ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগদানের ৩১ বছর পূর্ণ করল।

শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৩০ বছর পূর্ণ উপলক্ষে গত বছরের এপ্রিলে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মহিলা পুলিশ দল সোচ্চার রয়েছে সামাজিক-সম্প্রীতি সুসংহত করতে। আমি কোনো মিশনে গেলেই উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের সেনাদের কথা বলি।’ জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রশংসা অর্জন আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই গৌরবের।

প্রসঙ্গত, এ পর্যন্ত জাতিসংঘের ৬৮টি মিশনের মধ্যে ৫৪টিতে এক লাখ ১৮ হাজার ৯৮৫ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী  অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের ১২২টি দেশের শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের ৯ হাজার ৫৯৩ জন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ওই সব দেশের ১৭টি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত আছেন। ১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরান শান্তি মিশনে যোগদানের মধ্য দিয়ে এ দেশের সেনাবাহিনীর ১৫ জন সদস্য জাতিসংঘের পতাকাতলে একত্র হন। কঙ্গো, নামিবিয়া, কম্বোডিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা/রুয়ান্ডা, লাইবেরিয়া, হাইতি, তাজিকিস্তান, কসোভো, জর্জিয়া, পূর্ব তিমুর এসব দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ একটি উজ্জ্বল নাম।

তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গত ৩০ বছরে এ দেশের ১৪২ জন প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। অর্থাৎ জাতিসংঘ শান্তি মিশনে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর শতাধিক সদস্য শহীদ হয়েছেন; পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন ১৪ জন। অন্যদিকে ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৭ বছরে শান্তি রক্ষা মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আয় হয়েছে ১৬ হাজার ৪৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।

Print Friendly

Related Posts