টাঙ্গাইলে ৯৩ গ্রাম প্লাবিত, সোয়া লাখ মানুষ পানিবন্দী

আরিফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি কমলেও বাকি সব কয়টি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে যমুনা, ঝিনাই ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার যমুনা নদীর পানি বিপসসীমার ৪১ সে.মি. উপরে, ধলেশ্বরী নদীর পানি ৮৩ সে.মি. এবং ঝিনাই নদীর পানি ৪৭ সে মি. বিপসসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী এবং গোপালপুর উপজেলায় এর ফলে নদী তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এতে করে এই উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭১ জন লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও ৪ হাজার ৫৭৫ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পাবে। জেলা প্রশাসনের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় এখন পর্যন্ত টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী এবং গোপালপুর উপজেলায় পানি প্রবেশ করেছে। আর এতে করে ২১ টি ইউনিয়নের অন্তত ৯৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

অপরদিকে ভূঞাপুর পৌরসভা আংশিক প্লাবিত হয়েছে। ফলে ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭১ জন পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। আর এর মধ্যে ২০ হাজার ৯৪৪ টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। অপরদিকে ১ হাজার ১৮৯টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই ৬ উপজেলার ১৪৭ বর্গ কিলোমিটার প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ১৬৩ মে.টন জির চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব এলাকাগুলোতে ত্রাণসামগী বিতরণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৫৭৫ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে বোনা আমন ১১৬৯ হেক্টর, রোপা আমন (বীজতলা) ১৩ হেক্টর, পাট ২৯৫ হেক্টর, আউশ ১০৮৮ হেক্টর সবজি ১৫০ হেক্টর, তিল ১৮৬০ হেক্টর নিমজ্জিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, যমুনা নদীর পানি কমলেও ধলেশ্বরীর, ঝিনাই, পুংলী, বংশাই, ফটিকজানি পানিতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে যমুনা ঝিনাই ও ধলেশ্বরী নদীর বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সামনে আরো নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রাধারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার জানান, এখন পর্যন্ত জেলার ৪ টি উপজেলায় ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ভূঞাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়। তবে নদীর পানি নেমে গেলে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ফসলি জমির কোন ক্ষতি হবে না। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস কাজ করছে বলে তিনি জানান।

 

 

 

Print Friendly

Related Posts