তুরস্কে ‍এখন এরদোয়ানের স্টিমরোলার চলছে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক অভ্যুত্থান কাটিয়ে ওঠার পর তুরস্কে ‍এখন এরদোয়ানে স্টিমরোলার চলছে। তুৃরস্কে শুক্রবারের ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ৬ হাজার লোককে আটক করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্য যারা দায়ী – রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেই ‘ভাইরাস’ থেকে মুক্ত করব্নে তিনি। তার কথা, ষড়যন্ত্রকারীরা কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারবে না। বিবিসি

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তার মধ্যে ইনসারলিক বিমানঘাঁটির কমান্ডার রয়েছেন। এই ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্র ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ব্যবহার করে থাকে। সেখান থেকে কোয়ালিশনের আইএসবিরোধী সামরিক কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে – বলছে পেন্টাগন।

এরদোয়ানের শীর্ষ সামরিক সহকারীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। জড়িত সেনাদের ধরতে আজও বিভিন্ন সেনা ঘাঁটিতে অভিযান চালানো হয়েছে। আরো অনেক বিচারক এবং আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আটকাদেশ জারি করা হয়েছে। একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা কলছেন, পুরো দেশে সরকার নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পেরেছে, তবে অভ্যূত্থানের জড়িত কিছু সেনা কর্মকর্তা এখনো আত্মসমর্পণ করেনি।

তুরস্কের বিচারমন্ত্রী বেকির বোজদাগ বলেছেন, প্রায় ৬ হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আটক এসব ব্যক্তির মধ্যে সামরিক বাহিনীর বেশ কজন উর্ধতন কর্মকর্তাও রয়েছেন। রয়েছেন প্রায় তিন হাজারের মতো বিচারক। আজ সকালেও সামরিক বাহিনীর কয়েকটি ঘাঁটিতে অপারেশন চালিয়ে সৈন্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ডেনিজলি প্রদেশের একটি ঘাঁটি থেকে ৫০ জন সৈন্যকে আটক করা হয়েছে।

যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন থার্ড আর্মির কমান্ডার জেনারেল এরদাল অজতার্ক, সেকেন্ড আর্মির অধিনায়ক জেনারেল আদেম হুদতি এবং বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান আকিন অজতার্ক।

সামরিক বাহিনীর আরো যে আটজন কর্মকর্তা তুর্কী সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে গ্রীসে চলে গেছেন রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে – তাদেরকে ফেরত দেওয়ার জন্যেও সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

বিচারমন্ত্রী বলেছেন, অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর সারাদেশে শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তারা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী তুর্কী নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারী। অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্যে গুলেনকেই সরকারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছেই এই আহবান জানিয়েছেন তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তিনি বলেন, তাকে ফেরত দেওয়ার জন্যে আপনাকে আমি বারবার অনুরোধ জানিয়েছি, আজকেও জানাচ্ছি। আমি কয়েকবারই আপনাকে বলেছি ওই ব্যক্তি ও তার চক্র তুরস্কে অভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু আপনি আমার কথা শোনেন নি।

ফেতুল্লাহ গুলেন অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ৭৫ বছর বয়সী গুলেন গত ১৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

তিনি বলেছেন, তুরস্কে কারা তার অনুসারী সেবিষয়ে তার কোন ধারণা নেই। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, তুরস্ককে এবিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দিতে হবে। তারপরেই এই অনুরোধ বিবেচনা করে দেখা হবে।

এই অভ্যুত্থান চেষ্টার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। অভ্যুত্থানের এই প্রচেষ্টাকে তিনি উল্লেখ করেছেন আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া উপহার হিসেবে কারণ সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালানোর একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।

এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিধান ফিরিয়ে আনারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তুর্কী প্রেসিডেন্ট।

Print Friendly

Related Posts