নির্মলেন্দু গুণের দাড়ি রহস্য

মেট্রো নিউজ ।। নির্মলেন্দু গুণের দাড়ি নিয়ে ছড়িয়ে- ছিটিয়ে আছে অনেক কথা, অনেক গল্প। কেউ বলেন দাড়ি রেখে ‍এ যুগের রবি ঠাকুর সেজেছেন। কেউ বলেন, কাটাকাটির ঝামেলার ভয়েই দাড়ি রাখা। আবা কেউ নারী বিষয়ক কিছু ‍এর পেছনে আছে কিনা- ‍এমন কৌতুহলকেও সামনে নিয়ে আসেন। ‍এসব নানা ধারণাকে ‍উড়িয়ে দিতে ‍এবার নিজেই মুখ খুলেছেন ‍এ যুগের রবীন্দ্রনাথ। তিনি তার ফেসবুকে নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন ‘দাড়ি’ রাখার গোপন রহস্য। ‍এ নিয়ে দেওয়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি ‍এখানে তুলে দেওয়া হলো :

।। রামসুন্দর ।।

অামার ঠাকুরদা স্বর্গত (অাশা করি)রামসুন্দর গুণ। ১৮৪০-১৯২০ খ্রিস্টাব্দ। অামার জন্মের ২৫ বছর অাগে তিনি ৮০ বছর বয়সে লোকান্তরিত হন। তাতে ধারণা করি, স্বর্গে বসে মাটি, অাগুন ও জল দিয়ে ২৫ বছর পরিশ্রম করে তিনি ঈশ্বরের অনুমোদন সাপেক্ষে অামার দেহ ও মনের কাঠামো গড়েছেন।

সেজন্যই তাঁর অাদলের সংগে অামার যত মিল, তত মিল তাঁর ৪ পুত্র বা ১১ নাতির মধ্যে অার কারও নেই।
অনেকেরই ধারণা, অামি কবিগুরুর অনুকরণে দাড়ি রেখেছি। তাও সত্য বটে, তবে তা ছোট সত্য। বড় সত্য হচ্ছেন রামসুন্দর গুণ। অামার পিতামহ।

অামার গোঁফটা অবশ্যঅামার ধারণা- তাঁর গোঁফের চেয়ে ভালো হয়েছে।

তিনি কবিতা লিখতেন না বটে, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া একটা খাতায় বেশ কিছু রামপ্রসাদী গান লেখা অাছে। অাছে তালপাতায় লেখা কিছু বেদমন্ত্র। তাতে মনে হয়- তিনি রামপ্রসাদের গানের ভক্ত ছিলেন। তাঁর হাতের লেখা সুন্দর ও সুস্পষ্ট ছিলো।

12189114

১৯০০ সালের কাছাকাছি সময় তিনি তাঁর গ্রাম কাশতলায় একটি এমই স্কুল ( ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত) প্রতিষ্ঠা করেন।
নেত্রকোণা শহরে প্রতিষ্ঠিত দত্ত হাই স্কুলের ( ১৮৮৯ইং)পর এটি ছিল নেত্রকোণার দ্বিতীয় স্কুল। বারহাট্টা সিকেপির প্রতিষ্ঠাতা মোহিনী মোহন গুণ রামসুন্দর গুণের প্রতিষ্ঠিত স্কুলের ছাত্র ছিলেন। সিকেপি প্রতিষ্ঠাকাল ১৯১৪।
তিনি ময়মনসিংহ কালক্টরেটে চাকরি করতেন। বাড়ি থেকে পালকিতে চড়ে নেত্রকোণা গিয়ে ট্রেনে চড়তেন।
নেত্রকোণা-মোহনগঞ্জ রেলপথটি তৈরি হয় তাঁর মৃত্যুর ১০ বছর পর, ১৯৩০-৩১ সালে।

নেত্রকোণার পান্ডববর্জিত পূর্বাঞ্চলে প্রথম স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য অামরা কাশবনে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারটি তাঁর নামে নামকরণ করেছি- রামসুন্দর পাঠাগার।

ঠিক কাজ করিনি?

তাঁর এই তৈলচিত্রটি এঁকেছিলেন অামাদের অারেক দাদু শিল্পী সারদা রায়। তাঁর কন্যা অামার জেঠিমা ছিলেন।

১৯১৩ সালে অার কোনো বাঙালি শিল্পী এমন নিখুঁত তৈলচিত্র করেছেন বলে জানি না।
তিনি লন্ডন-প্যারিস থেকে রঙ ও তুলি সংগ্রহ করতেন। তাঁর সমকক্ষ কোনো শিল্পীর কথা কি অাপনি জানেন? রবীন্দ্রনাথের ছবিতে হাতেখড়ি হয়েছিল ১৯২৬ সালের অাগে নয়।

নয়াগাঁও
১৪/১১/১৫

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts