‍এক মাসের প্রশিক্ষণে শাহবাগে দীপন হত্যা

বিডিমেট্রোনিউজ সিফাতের কাছ থেকে দীপন হত্যাকাণ্ড বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ আনসার আল ইসলাম সম্পর্কেও অনেক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে রিমান্ডে । স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সে বিস্তারিত অনেক তথ্য দিয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা ।

দীপন হত্যার সময় শামীম ওরফে সিফাত ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে গ্রেপ্তারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সিফাত হত্যার আগে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেকি করেছেন। হত্যার সময় ঘটনাস্থলে আরও পাঁচজন ছিলেন। এক মাস আগে থেকে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিফাত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলেও জানিয়েছিলেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান।

গত ২৩ আগস্ট দিবাগত রাতে ঢাকার উপকণ্ঠ টঙ্গী থেকে সিফাত ওরফে শামীম ওরফে মইনুল হাসানকে গ্রেপ্তারের পরদিন আদালতের মাধ্যমে ছয়দিনের হেফাজতে পেয়ে দীপন হত্যা মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

সামির ও ইমরান নামেও পরিচিত এই জঙ্গি হেফাজত শেষ হওয়ার একদিন আগেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে আদালতে নেওয়া হয়।

গোয়েন্দা পরিদর্শক ফজলুর রহমান তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন।

সোমবার সকালে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নেওয়া হয়। বিকেল পর্যন্ত মহানগর হাকিম আহসান হাবীব তার খাস কামরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

ব্লগার, প্রগতিশীল লেখক ও প্রকাশক হত্যায় জড়িত যে ছয়জনকে চিহ্নিত করে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে সিফাতও একজন। তার নামে পুরস্কারের অংক ছিল দুই লাখ টাকা।

গত বছর ৩১ অক্টোবর বিকালে শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়; ওই প্রকাশনা থেকে জঙ্গি হামলায় নিহত বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ বইটি প্রকাশ করা হয়েছিল।

সেদিনই অভিজিতের বইয়ের আরেক প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে এর কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আহসান হাবীবের আদালতে সোমবার ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়।

ঢাকার মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, জবানবন্দিতে দীপন হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয় জঙ্গি শামীম ওরফে সিফাত। স্বীকারেক্তির পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Print Friendly

Related Posts