জাতীয় প্রেস ক্লাবের নতুন সদস্যদের সম্মিলনী

বিডিমেট্রোনিউজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েপ্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবকে কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস বা কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। জাতীয় প্রেস ক্লাবকে জাতীয় রূপ এবং মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের নতুন সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত সম্মিলনী অনুষ্ঠানে সোমবার দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্যবস্থাপনা কমিটি।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, এখানে (প্রেস ক্লাব) বুদ্ধিজীবীরা আসবেন, জাতীয় ব্যক্তিত্বরা আসবেন, তারা সম্মানিত হবেন। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা আসবেন তারা সম্মানিত হবেন। কিন্তু জাতীয় প্রেস ক্লাবকে কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস বা কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। এটা অতীতে ছিল। সেই গোষ্ঠীর হাত থেকে আমরা প্রেস ক্লাবকে দখলমুক্ত করেছি। ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সতর্ক হতে হবে, প্রেস ক্লাবের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা আছে এমন কোনো সাংবাদিক যেন বঞ্চিত না হয়।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, কবি শামসুর রাহমান ও তোয়াব খানের মতো সাংবাদিকও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। আজকে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। যে পরিবেশের মধ্য দিয়ে দলমত নির্বিশেষে সাংবাদিকরা সদস্য পদ লাভ করেছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। সদস্য পদ পাওয়ার একটা মাত্র যোগ্যতা, পেশায় সাংবাদিক হতে হবে। বহুদিন থেকে যাদের এ যোগ্যতা ছিল তাদের যারা (বিগত কার্যনির্বাহী কমিটি) সদস্য পদ থেকে বঞ্চিত করেছেন, আমি মনে করি তারা ভুল করেছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ দেওয়ার দাবিতে যারা আন্দোলন করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই যে সদস্য পদ দেওয়া শুরু হয়েছে তা এখানেই শেষ নয়। প্রতিবছর ব্যবস্থাপনা কমিটি যোগ্যতা অনুযায়ী এই সদস্যপদ দেওয়া অব্যাহত রাখবে বলে আমি মনে করি।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের দুটি ভূমিকা রয়েছে। একটি হলো- প্রেস ক্লাব আমাদের (সাংবাদিক) সেকেন্ড হোম। এখানে আমরা আসব। যেসব সুযোগ সুবিধা রয়েছে, সেসব আমরা ভোগ করবো। একে অপরকে জানবো, সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হবো।

এই প্রেস ক্লাবের আরেকটি জাতীয় দায়িত্ব আছে। তা হলো- যখনই দেশে গণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক শক্তি বা সৈরাচারী শক্তির গণতন্ত্রকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করবে বা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেওয়া হবে, মুক্ত গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার উপর আঘাত আসবে-সে সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় রূপ নিয়ে দাঁড়াতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সাংবাদিক নেতা মোল্লা জালাল, আজিজুল ইসলাম ভুইয়া, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা, বর্তমান যুগ্ম-সম্পাদক ইলিয়াস খান ও আশরাফ আলী, কার্যনির্বাহী সদস্য সরদার ফরিদ আহমদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

নতুন সদস্যদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির খালিদ মুহীউদ্দিন, এটিএন নিউজের মহসিন আব্বাস, চ্যানেল নাইনের খুরশিদ হাসনাইন, দৈনিক সংবাদের কাজী রফিক, চ্যানেল আইয়ের তরুণ তপন চক্রবর্তী, একাত্তর টিভির বিজনেস এডিটর কাজী আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি তিন দফায় মোট ৫৭৭ জনকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ দিয়েছে। তাদের নিয়েই এই সম্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় প্রেস ক্লাব।

Print Friendly

Related Posts