লিখিত অভিযোগে যা জানালেন নির্যাতিত জাবি সাংবাদিক

জাবি প্রতিনিধি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের হাতে সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। মারধরের শিকার মো: মূসা বুধবার বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

এদিকে সাংবাদিক মারধরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্লবিদ্যালয় প্রেস ক্লাব। জাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তানজিদ বসুনিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক রিজু মোল্লা এই নিন্দা জানান ।

প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগপত্রে মো: মূসা অভিযোগ করে বলেন,‘মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুর একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেটে চাঁদাবাজির খবর পেয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখানে যাই। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে  ছাত্রলীগ কর্মী আকিক হোসেন সিয়াম(পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ) ও সানজিদ(আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ)সহ তাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্থান্তরের চেষ্টা করি। চাঁদাবাজ (রাব্বি)কে প্রক্টর অফিসের দিকে নিয়ে আসা পর্যন্ত ঐ দুই শিার্থী(ছাত্রলীগকর্মীকে) সহায়তা করি।

এসময় প্রক্টর স্যার ও নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান সুদীপ্ত শাহীন ভাইকে কয়েকবার ফোন করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। রাব্বিকে বিএনসিসি কার্যালয়ের পেছনে নিয়ে আসলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল ভাইয়ের অনুসারীরা তাকে মারতে শুরু করে’।

অভিযোগ পত্রে তিনি লিখেন,‘প্রশাসনের কাছে না দিয়ে মারতে শুরু করায় আমার সন্দেহ হয় যে তারা ঐ চাঁদাবাজকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। কারণ প্রশাসনের কাছে তুলে না দিয়ে তারা দু-একটি চড়থাপ্পর দিয়ে তাকে (চাঁদাবাজ) তাড়িয়ে দিতে পারে এমন সন্দেহ হওয়ায় একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি মারধরের ঘটনার চিত্র ও ভিডিও ধারণ করি। ভিডিও ধারণের কথা রাজীব আহমেদ রাসেল (সম্পাদক, জাবি শাখা ছাত্রলীগ) আমাকে মারার নির্দেশ দেন।

তার নির্দেশে শাখা ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মুরশিদুর রহমান আকন্দ, আইন বিষয়ক সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল, উপ-গণযোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কার্যকরী সদস্য অভিষেক মন্ডল, আল-বেরুনী হল (সম্প্রসারিত ভবন) এর সভাপতি সুমন সরকার, মিশু (ইংরেজি ৪০ ব্যাচ), সারোয়ার (৪০ ব্যাচ), সাজেদুল শাকিল (আইআর ৪১ ব্যাচ), ইমরান হোসেন (আইন ও বিচার-৪১ ব্যাচ), রেজওয়ান রুম্মান (ভূগোল-৪১ ব্যাচ) সহ ছাত্রলীগের ১২-১৫ জন নেতাকর্মী আমাকে কিল ঘুষি মারতে শুরু করে। চড়-থাপ্পর, কিলঘুসি, লাথি দেওয়ার পর সেখানে অবস্থানরত কয়েকজন থামালে রাজীব ভাই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আমার মোবাইল নিয়ে ধারণকৃত সব ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে মোবাইল ফেরত দেন। মারধরের পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসকাবের সভাপতি রিজু ভাই উপস্থিত হয়ে আমাকে উদ্ধার করেন’।

জাবি প্রেস কাবের নিন্দা:

এদিকে ছাত্রলীগের হাতে সাংবাদিক মারধরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় প্রেস কাব। জাবি প্রেস কাবের সাধারণ সম্পাদক তানজিদ বসুনিয়া এবং সভাপতি রিজু মোল্লা সাক্ষ্যরিত এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়,‘চাঁদাবাজির তথ্য সংগ্রহ করার সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় প্রেস কøাবের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং দৈনিক কালবেলা পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মো: মূসাকে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী কর্তৃক মারধর এবং সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা প্রদান যা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য হুমকি।  এ ধরণের ঘটনা একেবারেই অনাকাঙ্খিত, দুঃখজনক ও ন্যাক্করজনক। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারী উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি’।

Print Friendly

Related Posts