অপরূপ চলন বিল…

তাপস কুমার, নাটোর: ষড়ঋতুর দেশ এই বাংলায় ভাদ্র-আশ্বিন দুই মাস নিয়ে শরতকাল। এই শরতে চলন বিলের আশপাশের একটু উঁচু অনাবাদি জমিতে দিনভর বাতাসে দোল খায় কাশফুল। আর কাশবনের পাশ ছুটে যায়।

এই শরতে বেড়ানোর জন্য চলনবিলের তাড়াশ, গুরুদাসপুর কিংবা এর আশপাশের এলাকা বেছে নিতে পারেন। শরতে চলনবিলের তাড়াশের রূপের কোনো তুলনা নেই। গাছে গাছে কত না রঙের ফুল। কামিনী, কদম, শিউলি, হাসনাহেনা ফুটে সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে দিনে-রাত সমান তালে। শরতে ছায়া ঢাকা মায়ামাখা সিংড়ার বারুহাস, চৌগ্রাম তাড়াশ যেন একখানি ছবি।

এ ছাড়া আশপাশে রয়েছে নদনদী ও খালবিল। এ সবকিছুই বয়ে গেছে চলনবিলের ওপর দিয়ে। শরতে বিল অঞ্চল অফুরন্ত জলে থৈ-থৈ করে। আকাশে কে যেনো রং তুলি নিয়ে সাদা আর নীলের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে। আত্রাই, গুড় , বারনাই , বড়াল , তুলসী,  চেঁচুয়া , ভাদাই নদীতো বয়ে গেছে চলনবিলের ওপর দিয়ে।

তাড়াশে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ রাধা গোবিন্দ মন্দির,  রশিক মন্দির, শিব মন্দির, বড় কুঞ্জবন দীঘি, উলিপুর দীঘি, মথুরা দীঘি, মাকরসন দীঘি। এখানকার কপিলেশ্বর শিব মন্দির, কালিকা দেবীর মন্দির, বাসুদেব ও গোপীনাথ বিগ্রহের মন্দির বিখ্যাত। তাড়াশ রাজবংশের পূর্বপুরুষ বলরাম রায় প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি মন্দির। রয়েছে কুঞ্জবন নামের সর্ববৃহৎ জলাশয় এবং তাড়াশের রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ প্রাচীন কীর্তির নিদর্শন।

তাড়াশের কাছে পিঠে বিনসারা গাঁও। রিকশা নিয়ে বিনসারায় যেতে পারেন। জানবেন, কিংবদন্তি বেহুলা সুন্দরীর বাবা বাছো বানিয়া ওরফে সায় সওদাগরের বাস ছিল এখানে।

ঢাকা থেকে সড়কপথে বাসে তাড়াশ যেতে হবে। রাজশাহীগামী এনপি এলিগেন্স কিংবা ন্যাশনাল পরিবহনে উঠে মহিষলুপিতে নামুন। মহিষলুপি থেকে ৫কিলোমিটার দূরে তাড়াশ। ভ্যানগাড়িতে ৪ যাত্রী ওঠানো হয়। জনপ্রতি ভাড়া নেয় ১০ টাকা। আর ঢাকা থেকে বাসে মহিষলুপি পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts