কল্পনায়
তোরা জ্যোৎস্নার কাছে দিয়েছিস ধরা আলোর সাপেক্ষে
আমি না হয় কল্পে তার জড়ালাম কিছু কণা
চাঁদ ছিলোনা ঘরে তবু বিগত আচরণে বুনেছি তার আভাস
আজ সাজাবো পুরো ঘরময় আমার অদৃশ্য উচ্ছ্বাস।
তোরা জল ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছিস জলের গভীরতা
আমি না হয় দুঃখ ছুঁয়েই জানলাম তার ছলাকলা
জলে আছে সাপের ছোবল, নুড়ির কিছু গল্প
আমিও তাতে চলছি ভেসে হয়ে পানসিতরীর কাব্য।
এখন তুমি ইতিহাস ( মা )
উপোস হাঁড়ির মতো
শূন্যতা যেমন ছোঁয় হৃদপিণ্ড,
তোমার মসৃণ শাড়ীর আঁচলের হলুদমাখা গন্ধ
আজও ছুঁয়ে যায় আমার ঘর-ময় সব মলিন অনুভব!
কতো পরিচিত দরোজা পেরিয়ে চলি
সময়ের আলো-আঁধারে,
তবু তোমার মতো স্নেহাতুর চাহনি
আর একটাও পাইনি খুঁজে, এ ত্রিভুজ সংসারে।
তুমি শূন্যে ভাসো তবু ছুঁয়ে যাও
শরীরে লতিয়ে উঠা অবিরাম হাঁটা-চলা, আমার দোলাচল!
জানি মা তুমি এখন ইতিহাস……
তবু চোখ বন্ধ করে পাই
কপালে তোমার চুমুর চিহ্ন,
আমার বায়না ধরা পুতুল বিয়ের সব আয়োজনে।
আমাদের দরোজার ওপর
মাধবী লতা হয়ে তুমি করো লুকোচুরি
রাত ঘনাতেই টের পাই তুমি মখমল পায়ে
পেরিয়ে ঘরের চৌকাঠ
নিত্য ছুঁয়ে দেখো
তোমার যত্নে রাখা সব
ভালোবাসা আর সম্পর্কের বিশ্বাস!
ঋতু বদলায়, বদলায় জলবায়ু
মানুষের মন বদলায়, বদলায় জীবনের গল্প
তবু তোমার চেহারা, তোমার মায়াময় হাসি
কিংবা
কুঁচি দেয়া শাড়ির ভাঁজ কখনও বদলায়নি……………
সম্পর্কের ধারাপাত
এই রোদ পালানো বিকেলে দিনের সব আয়োজন হলো শেষ,
সময়ের আনাচ কানাচ জুড়ে খুঁজি কেবল জীবনের মেঠোপথ;
যেখানে হাত ফসকে যাচ্ছে দূরে সম্পর্কের ধারাপাত!
প্রাঙ্গনে আসেনি বসন্ত তবে তার পাপড়ি গেছে ঝরে
তাই অনিবার্য স্মৃতি বুকে নিষ্ফলা জমিনে ফুরায় কলমের দাগ।
আজ সংস্করণহীন অস্তিত্বের কোষ, নদী জল শিশিরের কণা,
বৃষ্টির পাঁজরে মিশে যায় পাপ পুণ্য যতো নর্দমার জল, বিষাক্ত হেমলক
ঝরাপাতা আদৌ জানেনা গন্তব্য, কোথায় আছে তার শেষদৃশ্য
সময়ের নির্যাস ফেরে আসে শকুনের প্রলুব্ধ আয়োজনে;
তাই একতরফা ঘুমে অচেতন হয় মোহময় রাতের নাজুক শরীর।
অহেতুক যুক্তি তর্কে ঘোলাজলে হারায় শিশুর হাতের মার্বেল
মলিন চিবুক ঘিরে আসে শত নিরুত্তর প্রশ্ন, প্রতীক্ষিত রহস্যদ্বার
অন্তিম বয়ানের অপেক্ষায় আজন্ম পাঠক হয়ে জেগে থাকে যুগল ভ্রু
পার হয় কতো লোকাল সময়,কালের অনন্ত প্রভাত
লোকজ নগর ঘিরে শেষ ট্রেনে চলে ভ্রমণের দিনপঞ্জি।