বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ তরমুজে ক্যালোরির পরিমাণ আম, কাঠাল ও লিচু ইত্যাদি গ্রীষ্মকালীন ফলের চেয়ে অনেক কম।
তরমুজ ফল বা জুস দুই ভাবেই খাওয়া যায়। তবে ফ্রেশ তরমুজের বিচি ফেলে খেলে তার স্বাস্থ্যগত মান অক্ষুণ্ণ থাকে।
তরমুজে প্রায় ৯১ ভাগ পানি থাকে, কার্বহাইড্রেট থাকে সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ। কোনো ফ্যাট বা প্রোটিন এই ফলে থাকে না। ১০০ গ্রাম তরমুজে চিনির পরিমাণ থাকে ছয় দশমিক দুই গ্রাম।
১০০ গ্রাম তরমুজে সাত দশমিক পাঁচ গ্রাম কার্বহাইড্রেট থাকে। এক বাটি তরমুজে থাকে ১২ গ্রাম কার্বহাইড্রেট। এই কার্বহাইড্রেটের বেশির ভাগই হলো- গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ ও সুক্রোজ। সামান্য খাদ্য আঁশও থাকে এই তরমুজে।
তরমুজ মিষ্টি হওয়ায় অনেক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ভয় পান তরমুজ খাওয়ার ব্যাপারে। আবার অনেকে চিন্তায় থাকেন খেলেও কতটুকু খাবেন?
এক কাপ তরমুজ বা ১৫২ গ্রাম তরমুজে গ্লাইসেমিক লোড অনেক কম পরিমাণে থাকে। তাই সঠিক পরিমাণ তরমুজ খেলে কখনো রক্তের গ্লুকোজ বাড়াবে না। একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন, তার দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ, ইনসুলিন বা ওষুধের পরিমাণ, খাদ্যের সময়, পরিমাণ ও প্রকৃতির ওপর।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা এক কাপ (১৫২ গ্রাম) তরমুজ মধ্য সকালে খেলে কখনোই তার গ্লুকোজ বাড়বে না। কোনো ফল পরিমাণে বেশি খেলে রক্তের গ্লুকোজ বেড়ে যেতে পারে।
আবার কেউ সকালে অনেক নাস্তা খেয়ে মধ্য সকালে তরমুজ খেলে তাতেও গ্লুকোজ বাড়তে পারে। তাই খাদ্যের সঠিক পরিমাণ বজায় রেখে মধ্য সকালে বা বিকেলে তরমুজ অবশ্যই খাওয়া যাবে। তবে মনে রাখতে হবে এর পরিমাণ- এক কাপ ডায়েস করে কাটা ১৫২ গ্রাম এ পাওয়া যাবে ৪৫ দশমিক ছয় ক্যালোরি এবং বল করে কাটা এক কাপ ১৫৪ গ্রাম এ পাওয়া যাবে ৪৬ দশমিক দুই ক্যালোরি। সুতরাং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে একজন ডায়াবেটিক রোগী ৪০ থেকে ৬০ ক্যালোরি ফল খেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের তরমুজ খাওয়ার ক্ষেত্রে কখনোই পরিমাণ বাড়ানো যাবে না। তরমুজের ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, কপার, ভিটামিন এ ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক উপকারে আসে।
লাইকোপেন অনেক শক্তিশালী একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এর জন্য তরমুজ লাল। আর এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যানসারসহ আরো নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
সুতরাং তরমুজে ভয় নেই। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা সারাদিনের খাদ্য ম্যানু ঠিক রেখে পরিমিত পরিমাণ তরমুজ সঠিক সময়ে অনায়াসে খেতে পারবে।
তামান্না চৌধুরী
প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল