মেট্রো নিউজ, রংপুর : রংপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত জাপানি নাগরিক হোসি কুনিওর উৎপাদিত কোয়েল ঘাসের প্রজেক্টটি গো-খাদ্যের জন্য ছিল না । এই জাতীয় ঘাসের উৎপাদন বাংলাদেশে এই প্রথম বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এই জাতীয় ঘাস চাষ করে শিল্প জ্বালানি তেল এবং উন্নতমানের জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব বলেও জানান।
এছাড়া এ ঘাস থেকে মান সম্মত চিনি, মানুষের খাওয়ার উপযুক্ত উচ্চপুষ্টিসম্পন্ন খাদ্য উৎপাদন ও সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল জোগান দেওয়া সম্ভব। এদিকে, রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপপরিচালক ডা. সহিদুল ইসলাম।
ডা. সহিদুল জানান, গো-খাদ্যের উপযোগী নয় বিধায় জাপানি নাগরিক কুনিও তার দপ্তর থেকে এ খামারের জন্য কোনো অনুমতি কিংবা কোন পরামর্শ নেননি। তিনি জানান, ঘাসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে এ ঘাস ঢাকাস্থ প্রণিসম্পদ গবেষণাকেন্দ্রে পাঠানো হবে। তিনি এ ঘাসের নমুনা তার দপ্তরের আঙ্গিনাতে লাগিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য।
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির কুয়েল ঘাস সম্পর্কে জানিয়েছেন, এ ঘাসটি বাংলাদেশের পরিচিত ঘাষ নয়, এটি উৎপন্ন বা চাষও করা হয় না। এ জাতীয় ঘাসের কি কি গুণাগুণ রয়েছে তা পরীক্ষা করলে জানা যাবে। তবে এ জাতীয় ঘাস থেকে মানসম্মত চিনি উৎপাদন করা যায়।
গত ৩ অক্টোবর রংপুর নগরীর উপকণ্ঠে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি এলাকায় প্রকাশ্যে বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে কুনিওকে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ এ ঘটনায় সেদিনই সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করে। এর মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড নেওয়া হয়। বিএনপি নেতা রাশেদুন্নবী বিপ্লবকে চার দিনের মাথায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেলা হাজতে পাঠানো হয়। অপর আসামি কুনিওর ব্যবসায়িক পার্টনার হুমায়ুন কবীর হিরা ১০ দিনের রিমান্ডে এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
এ ছাড়া যে বাড়িতে কুনিও ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির মালিক জাকারিয়া বালা, যে বাড়ির সামনে কুনিও খুন হন, সেই বাড়ির মালিক খোকা মিয়ার পুত্র মুরাদ, প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক মোন্নাফ মিয়া এখনো আটক অবস্থায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
১৯৪৯ সালে জাপানে জন্ম নেওয়া কুনিও হোশি এক বছরের ভিসা নিয়ে ৮ মাস আগে রংপুরে আসেন। নগরীর মুন্সিপাড়া এলাকায় জনৈক জাকারিয়া বালার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন তিনি। জাকারিয়া বালা এক সময় জাপানে ছিলেন। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তিনি জাকারিয়ার বাসায় থাকতেন। তার ভিসার মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের ৩১ মে পর্যন্ত। তবে তার অবস্থানের ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে কিছু জানানো হয়নি।