অরুন্ধতী বনাম পরেশ রাওয়াল

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক কাশ্মীর-ছত্তীসগঢ়ে নিরাপত্তাবাহিনীর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সঙ্ঘ পরিবারের বিরাগভাজন হয়েছেন বহু দিনই। সেই লেখিকা তথা সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায়কে কাশ্মীরের বিক্ষোভকারীদের বদলে সেনার জিপে বেঁধে ঘোরানো উচিত বলে মন্তব্য করলেন বিজেপির অভিনেতা-সাংসদ পরেশ রাওয়াল। আর ওই টুইটকে সমর্থন করে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ গায়ক অভিজিত বলেন, ‘আর বিক্ষোভকারীদের গুলি করা উচিত!’

বুকার-জয়ী লেখিকার প্রতি বিজেপি-শিবিরের এমন আচরণের পরে অনেকেই বলছেন, বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার এমনই। কারও মত অপছন্দ হলেই তাকে দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়া বা পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার দাওয়াই দেয় তারা।  সে কারণে নোবলেজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও তাদের রোষ থেকে ছাড় পাননি। দলের সাংসদ হিসেবে পরেশ রাওয়ালের মন্তব্যে অবশ্য বিড়ম্বনায় বিজেপির একাংশ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি লিখেছেন, ‘‘হিংসায় উৎসাহ দেয় এমন কোনও মন্তব্য আমরা সমর্থন করি না।’’

সম্প্রতি কাশ্মীরে সেনার জিপে এক বিক্ষোভকারীকে বেঁধে ঘোরানোর ভিডিও ঘিরে নিন্দার ঝড় বয়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। ঘটনাচক্রে আজই সেই ঘটনায় জড়িত মেজর লিতুল গগৈকে সম্মানিত করার কথা ঘোষণা করেছে সেনা। শ্রীনগরে লোকসভা উপনির্বাচনের সময়ে বিক্ষোভকারী সন্দেহে ফারুক আহমেদ দার নামে এক স্থানীয় যুবককে সেনার জিপের বনেটে বেঁধে একটি এলাকা পার হন গগৈ। সেনা সূত্রের মতে, এ ভাবে কয়েক জন ভোটকর্মী ও জওয়ানকে বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরের হাত থেকে বাঁচাতে পেরেছিলেন ওই অফিসার। যদিও পরে জানা যায়, ওই যুবক মোটেই বিক্ষোভকারী ছিলেন না। বরং বিক্ষোভের উল্টো পথে হেঁটে তিনি উপ-নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন।

টুইটারে পরেশ লেখেন, ‘‘ওই বিক্ষোভকারীর বদলে বরং অরুন্ধতী রায়কে জিপের সঙ্গে বেঁধে ঘোরানো উচিত ছিল।’’ উপত্যকার সাম্প্রতিক অশান্তিতে সেনার ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন অরুন্ধতী। সেই প্রেক্ষিতে রাওয়ালের মন্তব্যকে কার্যত লুফে নেয় বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের অনেকেই। অরুন্ধতীকে ‘দেশদ্রোহী’ তকমা দেওয়া হয়। রাওয়ালের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘বর্তমান শাসক দল যে ভিন্ন মত সহ্য করতে নারাজ, তা এ থেকেই স্পষ্ট।’’

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts