বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ১৯০৭ সালের ১৭ জুন চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশনে (বটকলী স্টেশন) পৌঁছান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পরদিন ১৮ জুন এই স্টেশন থেকেই ট্রেনে চড়ে চট্টগ্রাম ছাড়েন তিনি।
১১০ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দুই দিনের সফরে চট্টগ্রাম এসেছিলেন, কবি-সাহিত্যিকদের সঙ্গে বসার পাশাপাশি সংবর্ধনায় গেয়েছিলেন গান। তবে তার সেই সফরের কোনো স্মৃতি চিহ্নই এখন বন্দরনগরীতে নেই।
নোবেলজয়ী কবির চট্টগ্রাম ভ্রমণে জড়িয়ে ছিল নগরীর দুটি বাড়ি, চট্টগ্রামের প্রথম থিয়েটার হল এবং চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশন। এরমধ্যে সদরঘাট এলাকার কমলবাবুর থিয়েটার (অধুনালুপ্ত লায়ন সিনেমা হল), জেনারেল হাসপাতাল পাহাড়ের উত্তর দিকের কমলকান্ত সেনের দ্বিতল বাড়ি এবং নগরীর পার্সিভিল হিলের ‘দি প্যারেড’ নামের বাড়িটির কোনো অস্তিত্বই এখন আর নেই।
রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত একমাত্র স্থাপনা চট্টগ্রাম বটতলী রেল স্টেশনেও নেই সেই সফরের কোনো স্মৃতি স্মারক।
চট্টগ্রামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো চিহ্নিত করে স্মৃতি স্মারক স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন অধ্যাপক অনুপম সেন ও অধ্যাপক ভূঁইয়া ইকবাল।
বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ থেকে প্রকাশিত সালাম আজাদ রচিত ‘রবীন্দ্র ভুবনে বাংলাদেশ’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চট্টগ্রাম সফরের বর্ণনা আছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজাদীর ৩৫তম বর্ষপূর্তিতে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত ‘হাজার বছরের চট্টগ্রাম’ নামের সংকলনেও এর বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
হাজার বছরের চট্টগ্রাম-এ লেখা হয়েছে, রবীন্দ্রনাথ দুদিনের সফরে চট্টগ্রামে এসেছিলেন ১৯০৭ সালের ১৭ জুন সোমবার। তার সফর সঙ্গী ছিলেন ভাইপো সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বন্ধু কেদারনাথ দাশগুপ্ত। রবীন্দ্রনাথের চট্টগ্রাম আসার উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের শাখা খোলার জন্য চট্টগ্রামের কবি সাহিত্যিকদের উৎসাহিত করা ও সুহৃদ যামিনীকান্ত সেনের আমন্ত্রণ রক্ষা। কলকাতা হাই কোর্টের উকিল যামিনীকান্ত সেন ছিলেন চট্টগ্রাম হিতসাধনী সভার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পরে শান্তিনিকেতনে শিক্ষকতা করা যামিনীকান্ত রবীন্দ্রনাথকে চট্টগ্রামে অভ্যর্থনা কমিটির প্রধান ছিলেন।
সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেন বলেন, ১৯০৭ সালের ১৭ জুন ভোরে খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামের অনেক গুণীজন ও জনসাধারণ কবিকে অভ্যর্থনা জানাতে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে জড়ো হয়েছিলেন।
‘রবীন্দ্র ভুবনে বাংলাদেশ’ এ উল্লেখ আছে, রবীন্দ্রনাথের আগমন উপলক্ষে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ত্রিপুরাচরণ চৌধুরী ও কাজেম আলি মাস্টার প্রমুখের উদ্যোগে রেল স্টেশনটি ফুল ও পাতা দিয়ে সাজানো হয়।
সূত্র : কলকাতার দৈনিক আজকাল